নওগাঁ প্রতিনিধি : অষ্ট্রেলিয়ান মিষ্টি আঙ্গুর এখন নওগাঁর মাটিতে চাষ হচ্ছে। গত দুই বছর ধরে পরীক্ষামুলক ভাবে আঙ্গুর চাষ করে দেখা গেছে, নওগাঁর মাটিতে উৎপাদিত আঙ্গুর অত্যন্ত সুস্বাদু, মিষ্টি, এবং ফলনও ভাল। আগামী অক্টোবর-নবেম্বর মাসের মৌসুম থেকে বাণিজ্যিক ভাবে নওগাঁয় আঙ্গুর উৎপাদন শুরু হবে বলে আশা করছেন খামার মালিক উজ্জল। এ আঙ্গুর চাষের ঘটনা জেলা জুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

নওগাঁর সফল আঙ্গুর চাষী সালাহউদ্দিন উজ্জল জানান, নওগাঁ সদর উপজেলার বরুণকান্দি এলাকায় ৩ বিঘা জমি লীজ নিয়ে অষ্ট্রেলিয়া থেকে আনা ৩৫০টি গাছ রোপন করা হয়। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পরীক্ষামুলক ভাবে শুরু হয় অষ্ট্রেলিয়ান ক্রিমসন সিডলেস এবং মেনেনডি সিডলেস জাতের আঙ্গুর চাষ। ২০১২ সালের মে-জুন মাসে প্রথম মৌসুমেই পরীক্ষামুলক চাষে ৮/১০টি গাছে আঙ্গুরের ফল আসে। অক্টোবর-নভেম্বর মৌসুমে ফল আসে অর্ধ শতাধিক গাছে। দুই মৌসুম শেষে দেখা গেছে, নওগাঁর মাটিতে উৎপাদিত আঙ্গুর মিষ্টি এবং সুস্বাদু।

সালাহ উদ্দিন উজ্জল আরো জানান, এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে দুই বছর। আঙ্গুরের ৪টি মৌসুম। পরিপূর্ণ হয়েছে গাছের বয়স। এখন ফল আসতে শুরু করেছে অধিকাংশ গাছে। এবারে ৩৫০টি গাছের মধ্যে প্রায় ১৭০ থেকে ১৮০ টি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে অষ্ট্রেলিয়ান আঙ্গুর। তিনি আশা করছেন, এই মৌসুমে প্রতিটি গাছ থেকে কমপক্ষে ২০ কেজি করে আঙ্গুর উৎপাদন হবে। যা থেকে খরচ বাদে আয় হবে কয়েক লাখ টাকা। এই মৌসুম শেষে গাছ ছেটে দিলে আগামী অক্টোবর নবেম্বর মাস থেকে ৩৫০টি গাছের মধ্যে ২৫০ থেকে ৩০০ গাছে ফল আসবে, ঠিক এমনটিই আশা করছেন তিনি।

আঙ্গুর চাষে উৎসাহিত আরেক যুবক মেহেদী হাসান জানান, নওগাঁর সফল আঙ্গুর চাষী সালাহউদ্দিন উজ্জলের এ সফলতা দেখে প্রতিদিন তার খামারে ভিড় করছে অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক। তারাও উৎসাহিত হচ্ছে আঙ্গুর চাষে। তিনি বলেন, সরকার যদি বিসিকের আদলে আঙ্গুর চাষে আগ্রহীদের জমি দিয়ে সহযোগীতা করতেন, তাহলে নওগাঁর আঙ্গুর চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পেত।

নওগাঁ জেলাসহ আশেপাশের এলাকায় আঙ্গুর চাষের অপার সম্ভাবনার কথা স্বীকার করে আগ্রহী আঙ্গুর চাষীদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে নওগাঁ, জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এসএম নুরুজ্জামান মন্ডল জানান, নওগাঁর মাটি আঙ্গুর চাষের জন্য উপযোগী। গত ২ বছর ধরে সালাহউদ্দিন উজ্জল পরীক্ষামুলক ভাবে আঙ্গুর চাষ করে সফলতা পেয়েছে। নওগাঁয় উৎপাদিত আঙ্গুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও মিষ্টি। নওগাঁয় সালাহ উদ্দিন উজ্জলের মতো আরো যুবকরা আঙ্গুর চাষে উৎসাহিত হলে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগীতা করা হবে। নওগাঁয় চাষকৃত আঙ্গুরের স্বাদ বিদেশ থেকে আমদানি করা আঙ্গুরের চেয়ে কোন অংশেই কম নয় বরং অনেক বেশী মিষ্টি।। সরকারী পৃষ্টপোষকতা পেলে নওগাঁর আঙ্গুর চাষের ব্যাপ্তি আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন সচেতন মহল।

(বিএম/অ/মে ২৩, ২০১৪)