বান্দরবান প্রতিনিধি: ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও বর্ণাঢ্য আয়োজনে বান্দরবানে ৪ দিনব্যাপী ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উৎসব শুরু হয়েছে।

আয়োজিত অনুষ্ঠানের ২য় দিন শনিবার সকাল ১১টায় বর্ণাঢ্য মহাশোভাযাত্রা বের করা হয়। বেলুন উড়িয়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।

এতে অন্যান্যের মধ্যে জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, আঞ্চলিক পষিদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ, জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষী পদ দাশ, সর্বজনীন দুর্গা মন্দিরের সভাপতি নিখিল কান্তি দাশ, উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি অঞ্জন কান্তি দাশ, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজন চক্রবর্তীসহ সহস্রাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বীরা উপস্থিত ছিলেন।

শোভাযাত্রায় ব্যানার, ফেষ্টুনসহ বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ নানা সাজে সজ্জিত হয়ে অংশ নেয়। বান্দরবানের রাজার মাঠ থেকে শুরু করে মধ্যমপাড়া, উজানীপাড়া ও কেয়াংপাড়া হয়ে পুনরায় রাজার মাঠে এসে সমাপ্ত হয়। পরে রাজার মাঠে আয়োজিত পূজামন্ডপে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের রাজভোগ ও মহাপ্রসাদ বিতরণ এবং ধর্মীয় নামকীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। জন্মাষ্টমীর এই অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মের ও বর্ণের শত শত নারী পুরুষের মিলন মেলা ঘটেছে রাজার মাঠে।

এদিকে গত শুক্রবার সকালে স্থানীয় রাজার মাঠে আয়োজিত জন্মাষ্টমী উৎসব ধ্বজা উত্তোলন ও মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলনের মাধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন জ্যেতিশ্বর বেদান্ত মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ অভেদানন্দ ব্রক্ষচারী মহারাজ। বিকেলের ২য় অধিবেশনে ধর্মসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি। ধর্মসভায় প্রধান আলোচক হিসেবে ধর্মদেশনা দেন ভুবনেশ্বরী বেদান্ত মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ উমানন্দ ব্রক্ষচারী মহারাজ।

উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বীর বাহাদুর বলেন, বান্দরবান জেলায় মানুষের মাঝে যে সম্প্রীতি রয়েছে তা অন্য জেলায় খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই সারাদেশের মানুষের কাছে বান্দরবান অসম্প্রদায়িক চেতনা আর সম্প্রীতির জেলা হিসেবে পরিচিত। বান্দরবানে প্রতিটি ধর্মের আচার অনুষ্ঠানে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের অংশগ্রহণ এই সম্প্রীতিকে আরো দৃঢ় করে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার এই চেতানাকে ধারণ করে এখানকার প্রতিটি অনুষ্ঠান জাকজমকপূর্ণ ভাবে মহা আনন্দে উদযাপন হয়ে আসছে দীর্ঘকাল ধরে। বান্দরবানের এই সম্প্রীতির মুলমন্ত্র প্রতিটি মানুষের মাঝে বিরাজ করলে মানুষের প্রতি ভালবাসা আরো অনেক গুণ বেড়ে যাবে। এ ব্যাপারে তিনি জাতি ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে এবং একে অপরের হিংসা পরিহার করে সৌহার্দপুর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।

অনুষ্ঠান মালার মধ্যে রয়েছে মনিবার সন্ধ্যায় আনন্দ বাজারে মহাপ্রসাদ বিতরন, ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমীর মহাপুজা, রাতে ধর্মীয় কীর্তন। রবিবার দুপুরে শ্রী কৃষ্ণের রাজভোগ, মহাপ্রসাদ বিতরন ধর্মসভা এবং সোমবার মহানামযজ্ঞের পুর্ণাহুতি, নগর পরিক্রমা ও শুভেচ্ছা বিনিময়।

(এইচবি/এলপিবি/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৫)