বরিশাল প্রতিনিধি: ‘স্কুলে ক্লাস করতে ভয় লাগে, তাই প্রায়ই ভয়ে স্কুলে আসিনা। একটু বৃষ্টি হলেই ছাঁদ দিয়ে পানি ডুকে ক্লাশ রুমে পানি জমে যায়। তাই পায়ের নিচে ইট দিয়ে ক্লাশ করতে হয়। এছাড়াও কখন যে ছাঁদের পলেস্তরা খসে মাথায় পড়ে আহত হতে হয়, সেই দুশ্চিন্তায়ও থাকতে হচ্ছে। খেলার মাঠে হাঁটু পানি। তাই দীর্ঘদিন থেকে সমাবেশ বন্ধ রয়েছে।”

এভাবেই আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলো, জেলার ১১০ বছরের পুরনো গৌরনদী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বার্থী তাঁরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আবিদুর রহমান। একথা শুধু রহমানের একারই নয়; প্রায় একই সুরে বলছিলো, ওই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির অসংখ্য শিক্ষার্থীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯০৫ সালের ৮ জানুয়ারি স্থানীয়দের সহযোগীতায় ৩ একর ৬২ শতক জমির ওপর প্রয়াত ভূপতি বকলা বার্থী তাঁরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৭ সালে এ বিদ্যাপিঠটি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী স্বীকৃতি লাভ করে। প্রতিষ্ঠার ১১০ বছর পর আজও শ্রেণি কক্ষ সংকট, পুরাতন ভবনের ছাঁদের পলেস্তরা খসে পড়ায় প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় আট’শ শিক্ষার্থীকে ক্লাশ করতে হচ্ছে।

নবম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদাউস জানায়, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ও নতুন ভবনের দোতালার বিভিন্নস্থানে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ওই ফাঁটল দিয়ে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে শ্রেণি কক্ষে পানি জমে যায়। সম্প্রতি সময়ে ছাঁদের পলেস্তরা খসে পড়ে সপ্তম শ্রেণির তিন ছাত্র আহত হয়। এ ঘটনার পর থেকে স্কুলের অন্যান্য ক্লাশের শিক্ষার্থীরা আতংকের মধ্যে ক্লাশ করছেন।

স্কুলের শরীরচর্চা শিক্ষক গোবিন্দ চন্দ্র নাগ বলেন, স্কুলের বিশাল মাঠ থাকা সত্ত্বেও সামান্য একটু বৃষ্টিতেই মাঠে হাঁটু সমান পানি জমে যায়। ফলে শিক্ষার্থীরা সমাবেশসহ খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সহকারী প্রধান শিক্ষক বি.এম ইদ্রিস আলী বলেন, বিদ্যালয়ে উল্লেখিত সমস্যা সমাধানের জন্য একাধিকবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লিখিতভাবে জানানো সত্ত্বেও কোন সমাধান হয়নি।

প্রাচীন এ স্কুলের নানা সমস্যার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাসুদ হাসান পাটোয়ারী বলেন, ইতোমধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে স্কুল পরিদর্শনে পাঠিয়ে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সমস্যাগুলোর সমাধান করা হবে।

(টিবি/এলপিবি/সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৫)