স্টাফ রিপোর্টার: বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার করা রিট আবেদনের রায়ের দিন আগামী বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি আব্দুর রবের হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় এ দিন ধার্য রয়েছে বলে দেখা গেছে। মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) কার্যতালিকাটি প্রকাশিত হয়।

এর আগে গত ৩০ আগস্ট বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়। যেকোনো দিন রায় দেওয়া হবে জানিয়ে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান(সিএভি) রাখেন আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলাটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে প্রধান আসামি খালেদার রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। গত ৯ এপ্রিল এ মামলাটির কার্যক্রমের স্থগিতাদেশ আরও ছয় মাসের জন্য বৃদ্ধি করেন আদালত।

এরপর থেকে শুরু হওয়া রুল শুনানি ও যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল ও ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী। দুদকের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন মো. খুরশিদ আলম খান।

খালেদার বিরুদ্ধে দায়ের করা তিন দুর্নীতি মামলার মধ্যে অন্য দু’টি নাইকো ও গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম বিচারিক আদালতে চলবে বলে যথাক্রমে গত ১৮ জুন ও ৫ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দুই মামলায়ই রায়ের কপি পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খালেদাকে।

বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চ নাইকো এবং বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি আব্দুর রবের হাইকোর্ট বেঞ্চ গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার রিট ও রুলের রায় দেন।

খালেদা জিয়াকে প্রধান আসামি করে করা এসব মামলা হাইকোর্টের আদেশে কয়েক বছর ধরে স্থগিত ছিল। সম্প্রতি মামলাগুলো সচলের উদ্যোগ নিয়ে রুল শুনানির দিন ধার্যের আবেদন জানায় দুদক।

এসব মামলায় স্থায়ী জামিনে রয়েছেন খালেদা জিয়া।

গত ১৯ এপ্রিল গ্যাটকো, নাইকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার রুল শুনানি পেছাতে খালেদার চারটি সময়ের অাবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। পরে পর্যায়ক্রমে মামলাগুলোর রুল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় একই বছরের ৫ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।

এরপর মামলাটি বাতিল চেয়ে ওই বছরই হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সে বছরের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। একই সঙ্গে মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না তার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।

ওই মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন-এম সাইফুর রহমান (মৃত), আবদুল মান্নান ভূঁইয়া (মৃত), মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম কে আনোয়ার, এম শামসুল ইসলাম (মৃত), আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী, সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন।


(ওএস/এসসি/সেপ্টেম্বর১৫,২০১৫)