স্টাফ রিপোর্টার : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে প্রধান করে গঠিত বেতন বৈষম্য কমিটির সঙ্গে আলোচনা সম্ভব নয় উল্লেখ করে ভর্তি পরীক্ষা বয়কটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে তারা এ ঘোষণা দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন সংলগ্ন অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে দুপুর ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালিত হয়।

তারা বলেন, যিনি শিক্ষকদের ব্যপারে সব সময় নেগেটিভ ধারণা পোষণ করেন তার নেতৃত্বে গঠিত বেতন বৈষম্য কমিটির সঙ্গে কোন ধরণের আলোচনা সম্ভব নয়। প্রয়োজনে ভর্তি পরীক্ষাও বয়কটের ঘোষণা দেয়া হবে।

অবস্থান কর্মসূচিতে ফেডারেশনের সভাপতি ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যদি শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবিসমূহ মানা না হয়, তাহলে আমরা ঈদের পর আরো কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। তাই সরকারকে বলবো অবিলম্বে শিক্ষকদের দাবিসমূহ মেনে নেয়া হোক।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এরমধ্যে যদি আলোচনায় বসতে হয় শিক্ষকরা বসবেন। আমরা আবারো প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ কামনা করছি। নতুবা প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাও বর্জন করার ঘোষণা আসতে পারে।`

অবস্থান কর্মসূচিতে লাগাতার ক্লাস বর্জনের প্রতি ইঙ্গিত করে ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ শ্রীলঙ্কা এমনকি ইউরোপের ফ্রান্সের শিক্ষকরাও তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ক্লাস বর্জন করেছেন। আমাদের দাবি যেহেতু যৌক্তিক সেহেতু আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে। আমরা জানি বর্তমান সরকার উচ্চ শিক্ষাবান্ধব একটি সরকার। আর আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া হলে দীর্ঘদিন কর্মবিরতির মত কোনো কর্মসূচি দিতে হলেও আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।`

এ সময় অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষকরা আলোচনায় বসবেন না বলেও উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেতন বৈষম্য নিরোধ কমিটিকে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ এখানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিজ্ঞমন্ত্রী এবং সচিব রয়েছে। যারা সব সময় শিক্ষকদের দাবি নিয়ে কথা বলেছেন। তবে যে অর্থমন্ত্রী শিক্ষকদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন তাকে এখানে প্রধান করায় আমরা আপতত এ কমিটির সঙ্গে কোন ধরণের আলোচনায় বসতে চাচ্ছি না। আমাদের ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আমরা সে অনুযায়ী কাজ করবো।

শিক্ষক সমিতির সদস্য অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভূইয়া বলেন, বেতন স্কেল কোনো পেশাজীবী শ্রেণির অবনমন করা হয় না। বরং সেখানে তাদের উন্নতি ঘটে কিন্তু এই বেতন স্কেলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবনমন করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল এর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন- অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, অধ্যাপক মো. নিজামুল হক ভূইয়া, অধ্যাপক জিয়া রহমান, অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানা রহমান, অধ্যাপক গোলাম রব্বানী প্রমূখ।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনে ডাকে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে চলে শিক্ষকদের কর্মবিরতি। তবে পূর্ব নির্ধারিত পরীক্ষা সমূহ রুটিন মোতাবেক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সময় কোন বিভাগে ক্লাস নেয়নি শিক্ষকরা।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৫)