নিউজ ডেস্ক: জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় ‘বিচক্ষণ নেতৃত্বের’ স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিয়নস অফ দি আর্থ’ পুরস্কার পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পুরস্কার হাতে নিয়ে তিনি বলেছেন, বাংলার মানুষ শিখেছে- দুর্যোগে কীভাবে বাঁচতে হয়, কীভাবে লড়তে হয়।

রবিবার নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচীর (ইউএনইপি) নির্বাহী পরিচালক অ্যাচিম স্টেইনার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন।

এ পুরস্কার বাংলাদেশের মানুষের প্রতি উৎসর্গ করে শেখ হাসিনা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের জনগণের ঐকান্তিকতা ও দৃঢ়তার স্বীকৃতি এই পুরস্কার।”

চলতি বছর শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক এই সর্বোচ্চ পুরস্কার দেওয়া হল ‘পলিসি লিডারশিপ’ ক্যাটাগরিতে। প্রতিবেশগতভাবে ‘নাজুক অবস্থায় থাকা’ বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ‘সামগ্রিক পদক্ষেপের স্বীকৃতি’ এই পুরস্কার।

পরিবেশ নিয়ে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৪ সাল থেকে প্রতিবছর চারটি ক্যাটাগরিতে ‘চ্যাম্পিয়নস অফ দি আর্থ’ পুরস্কার দিয়ে আসছে ইউএনইপি।

শেখ হাসিনা বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমার দেশের মানুষ শিখেছে, কীভাবে বাঁচতে হবে, কীভাবে লড়তে হবে। আর আমরা তা করছি নিজেদের সম্পদ ব্যবহার করে।”

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় অনেক দেশ বাংলাদেশকে অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে উল্লেখযোগ্য কোনো অর্থ বা সহায়তা মেলেনি। এ কারণে আমরা নিজেদের সম্পদ ব্যবহার করে, নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে দেশ বাঁচাতে মানুষ বাঁচাতে কাজ শুরু করি।

এর আগে শেখ হাসিনাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে ইউএনইপির নির্বাহী পরিচালক বলেন, উন্নয়নশীল বিশ্বে বাংলাদেশই প্রথম ‘ক্লাইমেট চেইঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করে পরিবেশ সুরক্ষার কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে; আর তা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার ‘দূরদর্শী নেতৃত্বের’ কারণে।

শেখ হাসিনার উদ্যোগে বিশ্বে প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে নিজস্ব জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের কথাও বলেন স্টেইনার।

তিনি বলেন, এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে, বাংলাদেশে বাজেটের ৬-৭% অর্থ নির্দিষ্ট করে রাখা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবজনিত শঙ্কা মোকাবিলায় যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য।

জাতিসংঘের লক্ষ্য অনুযায়ী ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্যে নিরাপদ একটি বিশ্ব রচনার কার্যক্রমে শেখ হাসিনার ‘বিচক্ষণ’ নেতৃত্ব অনেক রাষ্ট্রকেই ‘উৎসাহিত’ করছে মন্তব্য করে স্টেইনার বলেন, এর স্বীকৃতি হিসেবেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’পুরস্কারে ভূষিত করা হল।

পুরস্কার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং এই পুরস্কার তিনি উৎসর্গ করেন বাংলার মানুষের জন্য।

(ওএস/এলপিবি/সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৫)