আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, জননেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সদ্য প্রয়াত সৈয়দ মহসিন আলী স্মরণে এক নাগরিক শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে মন্ট্রিয়লের পার্ক ভিউ রিসেপশন হলে।

সাবেক শ্রমিক নেতা শ্যামল দত্তের সভাপতিত্বে ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক তাজুল মোহাম্মদের পরিচালনায় মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা মেজর দিদার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মুহিবুর রহমান, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব অব মন্ট্রিয়লের সভাপতি দীপক ধর অপু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এম. এমরান, সৈয়দ রহমত উল্ল্যা ও সাবেক ছাত্র নেতা বাবলা দেব। শোক সভার শুরুতেই মরহুমের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। বিপুল সংখ্যাক প্রবাসীর উপস্থিতিতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এডভোকেট অমলেন্দু ধর, সাংবাদিক সদেরা সুজন, ইতরাদ জুবেরী সেলিম, মতিন মিয়া, সৈয়দ আব্দুর রব, সাজ্জাদ হোসেইন সুইট, জিয়াউল হক জিয়া, অনুপ চৌধুরী মিঠু, সরোজ দাস, গোলাম মোতাহির মিয়া, পিনাকী ভট্টাচার্য, লুৎফুর হক, মুহিম আহমেদ প্রমুখ।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসীন আলী ছিলেন গণমুখী রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, ৪১ বছর রাজনীতির দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় দুর্নীতির কলঙ্ক যাকে স্পর্শ করেনি । তিনি ছিলেন বর্তমান সময়ের একজন ব্যতিক্রমধর্মী রাজনৈতিক নেতা। সাদা মাটা এক অসাধারন ব্যাক্তি ছিলেন এই মানুষ। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সাধারণ গণ মানুষের প্রাণের নেতা, যাঁর কাছে গিয়ে কেউ কোনোদিন খালি হাতে ফিরেনি। শুধু রাজনৈতিক সম্প্রীতিই নয়, একটি অসাম্প্রদায়িক মানবিক চেতনা তিনি লালন করতেন।

এমন সহজ সরলমনা এই রাজনীতিবিদ এতটাই সরল ছিলেন যে, অসুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে যাওয়ার ভাড়া ছিলনা, টাকা কর্জ করে তাকে সেখানে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে । কতটা সৎ থাকলে এরকম পরিস্থিতির শিকার হতে হয় সৈয়দ মহসীন আলী তার প্রমাণ । ষাটের দশক থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি সৈয়দ মহসীন আলী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শের সৈনিক ছিলেন । ’৭৫ এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পরবর্তী অবৈধ সামরিক জান্তারা ছলে-বলে নানা প্রলোভন দেখিয়েও তাঁর স্বীয় আদর্শ থেকে সরাতে পারেনি। বরং ‘৭৫এর পর সারাদেশে আওয়ামী পরিবারে যখন চরম দুঃসময় তখন তিনি মৌলভীবাজার আওয়ামী লীগকেধরে রেখছিলেন শক্ত হাতে। তিনি কখনো আপোষ করেননি সংস্কৃতি ও খেলাধুলায় পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।

জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মানুষের মাঝে থেকেই উপভোগ করেছেন। তার জীবন ছিল খোলা বইয়ের মতো । মানুষ মানুষের জন্য এই নীতির একজন প্রতীক ছিলেন তিনি । গণমুখী রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র সৈয়দ মহসীন আলী। তিনি ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে একজন প্রকৃত মাটি ও মানুষের নেতা। তাঁকে নিয়ে কিছু অসৎ সাংবাদিকরা যতই ফালতু কাহিনীর সৃষ্টি করুক না কেন তাঁর অসাধারণ মানবিক গুনাবলীতে এসব সাংবাদিকরা পরাজয় মেনে নিতে হয়েছে। এমন নক্ষত্রখচিত জননেতা যুগে যুগে জন্ম হয় কি না সন্দেহ। বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন জননেতাকে চিনতে ভুল করেননি। তাইতো মন্ত্রী করার জন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁকে খুঁজে বের করতে হয়েছে তিমনিভাবে কিছু অসৎ সাংবাদিকদের নানামুখি লেখালেখির পরও শেখ হাসিনা তাঁকে সস্মানে মন্ত্রী সভায় বহাল রেখেছিলেন। বক্তারা শেখ হাসিনাকে এজন্য ধন্যবাদ জানান।

জননেতা সৈয়দ মহসীন আলীর নামে মৌলভীবাজারে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা রাস্তার নামকরণ করার জোর দাবি জানান।

(ওএস/এএস/অক্টোবর ০৮, ২০১৫)