সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : শারদীয় দুর্গাপুজার বিজয়া দশমীর আনন্দ ভাগাভাগি ও প্রাণবন্ত করতে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরায়  অনুষ্ঠিত হয়েছে নৌকা বাইচ। শুক্রবার বিকেলে কপোতাক্ষ নদে অনুষ্ঠিত এ নৌকা বাইচ দেখতে দু’পারে কয়েক হাজার নারী, পুরুষ ও শিশু ভিড় জমায়।

১০ বছরের বেশি সময় ধরে খাজরা ইউনিয়ন পুজা উদযাপন পরিষদের আহবানে চলে আসা এ নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয় বিজয়া দশমীর পরের দিনে। আশাশুনির বাইরে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ এ নৌকা বাইচ উপভোগ করতে আসে। বাইচে অংশ নেয় চারটি নৌকা।

জেলা ও জেলার বাইরে খুলনার তেরখাদা ও কয়রার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে চারটি সরেঙ্গা, ছিপ, কোষা বাচারী নৌকা অংশ নেয়। আমাদি থেকে খাজরা বাজার পর্যন্ত এক কিলোমিটার দীর্ঘ নান্দনিক এ নৌকা বাইচ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এলাকার সকলেই এ দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকেন। শহরে কর্মব্যস্ততার অবসান ঘটাতে চলে আসেন গ্রামে। এদিনটি তারা কাটান একেবারেই গ্রাম্য পরিবেশ ও গ্রাম্য সংস্কৃতির সঙ্গে।
প্রতিযোগিতায় খুলনার তেরখাদা প্রথম ও কয়রা দ্বিতীয় স্থান লাভ করে।

সন্ধ্যায় খাজরা বাজারে খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিমের সভাপতিত্বে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী সাংসদ ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাম্মত মমতাজ বেগম, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আজমল হুদা, সাংসদের ব্যক্তিগত সহকারি শম্ভুজিৎ ম-ল, খাজরা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীণেশ কুমার ম-ল প্রমুখ।

প্রধান অতিথি বলেন, এদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ খ্রীষ্টান এদেশে ভাই ভাই হিসেবে বসবাস করছে। এ বাইচ প্রতিযোগিতায় হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। যান্ত্রিকতার জীবন থেকে বেরিয়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে নৌকা বাইচ দেখতে আসা দর্শকরা একটি আনন্দঘন দিন কাটালেন। এর মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে বাংলা সংস্কৃতির প্রাচীন ঐতিহ্য। এ আয়োজন দিনদিন আরো প্রাণবন্ত ও উৎসবমুখর হোক এমনটি কামনা করেন এ অঞ্চলের মানুষ।
প্রধান অতিথি প্রথম স্থান অধিকারি তেরখাদা দলনেতার হাতে নগদ ২৫ হাজার ও দ্বিতীয় স্থান অধিকারী কয়রা দলনেতার হাতে ১৫ হাজার নগদ টাকা পুরষ্কার হিসেবে তুলে দেন।

(আরকে/অ/অক্টোবর ২৩, ২০১৫)