বান্দরবান প্রতিনিধি : নিজেদের অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছে ম্রো ন্যাশনাল পার্টির (এমএনপি) সদস্যরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে অস্ত্র সমর্পণের ফলে পাঁচ বছরের সশস্ত্র সংঘাতের অবসান হলো।

প্রতিনিয়ত রুক্ষ ভূমিতে নানান প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা মোকাবেলার মধ্য দিয়ে বসবাস করে আসছেন ম্রো সম্প্রদায়ের লোকজন। নিজেদের নিরাপত্তা ও পশু শিকারের জন্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র বহন করতে হতো তাদের। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রচেষ্টায় সার্বিক নিরাপত্তব্যবস্থা সুনিশ্চিত হওয়ার পর তাদের কেউ কেউ চাষাবাদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য করে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকে। অন্যদিকে ম্রো সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া কিছু যুবকের হতাশা ও ঐতিহ্যকে পুঁজি করে নতুন রাজনৈতিক মতাদর্শে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে ২০১০ সালে ম্রো ন্যাশনাল পার্টি (এমএনপি) গঠন করা হয়। এ পর্যন্ত অন্তর্দলীয় সংঘাতে খুন হয়েছেন এমএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেনরুং ম্রো, সেকেন্ড ইন কমান্ড পালে ম্রোসহ অন্তত ২৫ নেতা-কর্মী।

মূলত বাঙালি কর্তৃক জায়গাজমি দখল বন্ধ, স্থানীয় সমস্যার সমাধান, ‘ক্রামা’ ধর্ম প্রচারের কথা বলা হলেও এমএনপি পোয়ামুহুরী-দুয়াছড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম, অপহরণ, অস্ত্র বেচাকেনাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

‘সম্প্রীতির বান্দরবান’ স্লোগানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় বান্দরবান রিজিয়ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করাসহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে। এরপর সামাজিক একত্রীকরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এমএনপির কিছু সদস্য আত্মসমর্পণ করছে, তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।

এক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল শফিকুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রমুখ বিশেষ অবদান রেখেছেন।

এমএনপির সদস্যরা সংঘাতের পথ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসায় স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সম্পর্ক সুদৃঢ় এবং দেশে-বিদেশে ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে।

(ওএস/এসসি/নবেম্বর০৫,২০১৫)