নওগাঁ প্রতিনিধি : চলতি পিএসসি পরীক্ষায় এবার নওগাঁ অঞ্চলে সাত দৃষ্টি প্রতিবন্দী শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। গ্রাম পর্যায়ের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের কথা চিন্তা করে এনজিও সংস্থা ব্র্যাক দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ব্রেইল পদ্ধতির শিক্ষাদান বিভাগটি চালু করেছে। প্রাথমিকভাবে এই ব্রেইল শিক্ষা পদ্ধতিটি দেশের দুটি এলাকা মৌলভীবাজারের সিদ্ধুরখানে ৬ জন ও উত্তরবঙ্গের নওগাঁ সদর ও রানীনগরের ৭ জন প্রতিবন্ধী শিশুদের মাঝে একযোগে এই ব্রেইল পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করে আসছে।

তাদের এই বিভাগের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সাত শিশু এবারের পিএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। তারা দৃষ্টিশক্তিহীনতাকে হার মানিয়েছে।

নওগাঁর চন্ডিপুর গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধি আকাশ ও শহিদুল ইসলাম (বৃত্ত)। বৃত্ত অত্যন্ত মেধাবী কিন্তু তার গরীব পরিবারের অবহেলার জন্য ব্র্যাকের পক্ষ থেকে তাকে একটি গাভী দেয়া হয়েছে, যাতে তার পরিবার তাকে স্কুলে যেতে সহায়তা করে। এছাড়াও নওগাঁর দুবলহাটির মা-বাবা হারা এতিম-অসহায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি মুনিরা তার নানীর কাছ থেকে ব্র্যাক স্কুলে ব্রেইল পদ্ধতির মাধ্যমে পড়াশুনা করছে। বক্তারপুর গ্রামের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মেয়ে হাসি এবং আদমদুর্গাপুর গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রহিমা এই পদ্ধতিতে ব্র্যাক স্কুলে পড়াশুনা করে এবার পিএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। পার্শ্ববর্তী সান্তাহারের উথরাইল গ্রামের ব্র্যাক স্কুলে দুই মেধাবী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জয় ও জিসান ব্র্যাক স্কুলে ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশুনা করেছে আর তাদের শিক্ষিকার নিরলস প্রচেষ্টার কারণে তারা আজ সকল বাধাকে উপেক্ষা করে প্রতিবন্ধিতাকে জয় করতে চলেছে।

উথরাইল গ্রামের শিক্ষিকা তাছমেরী খানম বলেন, জয় ও জিসান অত্যন্ত মেধাবী। তারা যে কোন বিষয় খুব সহজে আয়ত্ত করে নিতে পারে। তারা এবারের পিএসসি পরীক্ষায় নিশ্চয় ভালো ফলাফল করবে এবং সমাজকে দেখিয়ে দেবে যে তারা সমাজের বোঝা নয় । এছাড়াও নওগাঁর পাহাড়পুর ও চন্ডিপুর গ্রামের ব্র্যাক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষিকা নিলুফার ইয়াসমিন ও তাপসী রাবেয়া জানান, তারা এই প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছেন। তাদের আশা তাদের শিশুরা অবশ্যই এই পিএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল করবে। তবে শুধু এই ক’জন শিশুদের জন্য নয়, অতি দ্রুত সারা বাংলাদেশের সব প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ব্র্যাক অবশ্যই আরও জোড়ালো প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে তাদের আশা।

(বিএম/এইচআর/নভেম্বর ২৯, ২০১৫)