স্টাফ রিপোর্ট : ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানা থেকে পালানোর একদিন পরই ধরা পড়লেন খুনের আসামি এসআই রেজাউল করিম। সোমবার সকালে দায়রা জজ আদালত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পরিদর্শক মো. মইনুল।




তিনি জানান, এসআই রেজাউল করিম সকালে আদালতে এক আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন- এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

মো. মইনুল জানান, রবিবার আদালতের হাজতখানা থেকে পালানোর ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। তাকে আজকেই (সোমবার) আদালতে হাজির করা হবে বলে তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, রবিবার বিকেলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানা থেকে ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন হত্যা মামলার আসামি পুলিশের এসআই রেজাউল করিম পালিয়ে যান।

মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোফাখখর রবিবার জানান, ব্যবসায়ী ফারুক হত্যা মামলায় এসআই মো. রেজাউল করিমের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এরপর তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে তিনি সেখান থেকে বের হয়ে পালিয়ে যান।

চাঁদার দাবিতে খুনে সহায়তার অভিযোগে কাফরুল থানার সাবেক দুই উপ-পরিদর্শক নুরুজ্জামান (বর্তমানে রূপনগর থানায় কর্মরত) ও রেজাউল করিমের (বর্তমানে চাঁদপুর থানায় কর্মরত) বিরুদ্ধে রবিবারই অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান রবিবার তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। পরে শুনানিতে তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মামলার ভিকটিম ফারুক হোসেন ঠিকাদারির কাজ করতেন। আসামিরা ফারুক হোসেনের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ফারুককে ওয়ারেন্ট আছে বলে উত্তর কাফরুল থেকে এসআই নুরুজ্জামান ও সোর্স বাবু কাফরুল থানায় নিয়ে আসেন। থানায় চাঁদার টাকার জন্য তাকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। মামলার বাদী পারভীন হক খবর পেয়ে ভাইকে থানায় দেখতে গিয়ে তার চিৎকার শুনতে পান। ভিকটিম ফারুক পারভীন হককে বলেন, তাদের টাকা দিয়ে দাও। তা না হলে তারা আমাকে মেরে ফেলবে। তার কথা শুনে আসামিদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

পরে ভিকটিম ফারুক হোসেনকে অন্য মামলায় রিমান্ড আবেদন করলে আদালত শরীরের অবস্থা দেখে কারাগারে পাঠান। ২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি কারাগারে মারা যান।

ওই ঘটনায় পারভীন হক ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকার সিএমএম আদালতে কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ. লতিফ, এসআই আফাজ উদ্দিন, এসআই নুরুজ্জামান, এসআই রেজাউল করিম ও সোর্স বাবু ওরফে রতনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

২০১২ সালের ৬ নভেম্বর তদন্তপূর্বক মামলাটি কাফরুল থানায় এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত হয়।

২০১৫ সালের ১ মার্চ সিআইডির পরিদর্শক মাজাহারুল হক কাফরুল থানার সাবেক এসআই নুরুজ্জামান, এসআই মো. রেজাউল করিম ও সোর্স বাবু ওরফে রতনের ‍বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অপরদিকে কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ. লতিফ ও এসআই আফাজ উদ্দিনকে অব্যাহতির সুপারিশ করেন।

(ওএস/এইচআর/নভেম্বর ৩০, ২০১৫)