বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবান বোমাং সার্কেলের জুম খাজনা আদায়ের ঐতিহ্যবাহী রাজপুণ্যাহ উৎসব আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে। এ উপলক্ষে সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় বোমাং সার্কেল কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে। সাংবাদিক সম্মেলনে বংশপরস্পরায় হয়ে আসা ঐতিহ্যবাহী রাজপুণ্যার তারিখ ঘোষনা করেন ১৭তম বোমাং রাজা ইঞ্জিনিয়ার উ চ প্রু চৌধুরী। এ সময় ১৪তম ও ১৫তম রাজার রাজপুত্র, সাংবাদিক ও হেডম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।

বোমাং রাজা উ চ প্রু চৌধুরী জানান, জুম খাজনা আদায়ের ঐতিহ্যবাহী এই অনুষ্ঠান শত বছর ধরে হয়ে আসছে। প্রতিবছর এই মৌসুমে রাজপুণ্যাহ অনুষ্ঠান করা হয়। আগামী ১৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজপুণ্যাহ মেলার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এটি ১৩৮তম রাজপুণ্যাহ মেলা। ৩দিন ব্যাপী আয়োজিত এই মেলার প্রথম দিন ১০৯টি মৌজার জুমিয়াদের রাজস্ব আদায়ের অনুষ্ঠান, ২য়দিন হেডম্যান সম্মেলন এবং তৃতীয় দিন রাজপরিবারের সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময়। তিনি আরো জানান, বংশপরস্পরায় বোমাং রাজার ঐতিহ্য থাকলেও স্থায়ী কোন বোমাং রাজপ্রাসাদ নেই। তিনি জানান, পৌর শহরে রাজার নামে ৮ একর জমি সরকারী ভাবে লিজ রয়েছে। কিন্তু ডিমার্কেশন করা নেই। ফলে আধুনিক রাজপ্রাসাদ তৈরীর চিন্ত মাথায় থাকলেও জমি চিহ্নিত ও পরিমাপ না থাকায় সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসকের সাথে আলাপ করলে জেলা প্রশাসক সার্ভের সমস্যার কারণে জায়গার পরিমাপ করা যাচ্ছে না বলে তাকে জানিয়েছেন বলে দাবী করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।

আসন্ন রাজমেলা পন্ড করে দেয়ার হুমকি সম্পর্কে অভিযোগ করে বলেন, যে কোন গোষ্ঠি রাজপুন্যাহ মেলাটি ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি বিচলিত নন বলে সাংবাদিকদের অবহিত করেছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানোর পরামর্শ দেন সাংবাদিকরা।

রাজপুণ্যাহ মেলায় দেশী-বিদেশী হাজার হাজার মানুষের পদচারনায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠে শত বছরের এই ঐতিহ্যবাহী মেলা। মেলায় রাজস্ব আদায় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি থাকছে, যাত্রাপালা, পুতুল নাচ, মৃত্যুকুপ, সার্কাস, যাদুপ্রদর্শনীসহ বিভিন্ন খেলা দুলা।

(এএফবি/এইচআর/ডিসেম্বর ০৭, ২০১৫)