বাগেরহাট প্রতিনিধি : বঙ্গোপসাগরে এবার জেলে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতে বনদস্যু কাদের মাষ্টার বাহিনীর সদস্যরা বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলারচর উপকূলে বঙ্গোপসাগরের মান্দারবাড়িয়া এলাকা থেকে ৪৯ জন জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। বনদস্যুরা এসময়ে জেলেদের আহরিত মাছ ও অন্যান্য মালামাল লুটে নিয়েছে।

এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগরে তিন দফায় বনদস্যু বাহিনীর হাতে মুক্তিপনের দাবীতে ১৮৯ জন জেলে অপহৃত হলো। এর আগে সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৯ ডিসেম্বর রাতে বনদস্যু জাহাঙ্গীর ও নয়ন বাহিনী ১০০ জেলেকে এবং ৭ ডিসেম্বর রাতে নয়ন বাহিনী ৪০ জেলেকে জেলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহৃত এসব জেলে এখনো বনদস্যুদের কাছে জিম্মি রয়েছে বলে মহাজনরা জানিয়েছেন।


দুবলার চর ফিশারমেন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল আহমেদ শুঁটকি পল্লীতে ফিরে আসা জেলেদের বরাত দিয়ে জানান, বঙ্গেপাগরের মান্দারবাড়িয়া এলাকায় শুক্রবার অর্ধশতাধিক ট্রলারে মাছ ধরছিলেন জেলেরা। রাত ১০টার দিকে এসে মাষ্টার বাহিনীর ২০ থেকে ২৫জন সশস্ত্র বনদস্যু একের পর এক ট্রলারে হামলা চালায়। বনদস্যুরা প্রত্যেক ট্রলার থেকে একজন করে ৪৯ জনকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় তারা ট্রলারের মাছ, মোবাইল ফোনসহ মালামাল লুটে নেয়। অপহৃত জেলেদের বাড়ি খুলনার কয়রা উপজেলার চাকলা ও বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বলে মৎস্যজীবী নেতা কামাল আহম্দে নিশ্চিত করেছেন।

নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে দুবলারচরের বেশ কয়েকজন জেলে ও মহাজনের অভিযোগে জানা যায়, কাদের মাষ্টার বাহিনী যে ট্রলারটি ব্যবহার করে দস্যুবৃত্তি করছে সেটি অত্যাধুনিক এবং দ্রুতগামী। ওই ট্রলারটি খুলনা শহরের এক চিহ্নিত কালোবাজারীর। তার ট্রলারটি দস্যুবাহিনীর কাছে ভাড়ায় ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগকারীরা জনানা। তারা এবিষয়টি প্রশাসনকে নজরদারীতে রাখার দাবি জানিয়েছেন।

শরণখোলা উপজেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, একের পর এক অপহরণের ঘটনায় জেলেরা এখন সাগরে যেতে আগ্রহ হারাচ্ছে। মহানজনরাও মুক্তিপণ দিতে দিতে হতাশ হয়ে পড়েছেন। দস্যুদমন ও জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে পেশা ছেড়ে দেয়ারও চিন্তা করছেন অনেকে।

র‌্যাব-৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবির জেলে অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অপহরণের খবর শোনার পর র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। জিম্মি এলাকা চিহ্নিত করে জেলেদের উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে। অচিরেই এসব বনদস্যুদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

(এসএকে/এইচআর/ডিসেম্বর ১২, ২০১৫)