বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবান বোমাং সার্কেলের জুম খাজনা আদায়ের ঐতিহ্যবাহী রাজপুণ্যাহ উৎসব আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় ১৭তম বোমাং রাজা ইঞ্জিনিয়ার উ চ প্রু চৌধুরী আমলে এটি ২য় তম এবং বংশ পরম্পরায় ১৩৮তম রাজপুণ্যাহ মেলা ।

আজ সকাল সাড়ে ১০টায় বোমাং রাজা বাহাদুর রাজকিয় পোষাক পড়ে তরবারী হাতে নিয়ে অতিথিদের সাথে রাজবাড়ী থেকে বের হয়ে আসেন। এ সময় রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে তরুনীরা ফুল ছিটিয়ে স্বাগত জানান। রাজদরবারের বাদক দলের বিউগালের সুরে পাইক পেয়াদা, সৈন্য সামন্ত, উজির, নাজিররা গার্ড-অব-অনার দিয়ে অনুষ্ঠান স্থলে নিয়ে যান।

পরে ১০৯ মৌজার হেডম্যান, পাড়া কারবাড়ী ও পাইসিংরা উপঢৌকন হিসেবে ঘরের পালিত মোরগ, মদ ও নির্ধারিত জুম খাজনা প্রদান করেন। ৩দিন ব্যাপী আয়োজিত এ বারের রাজ পুণ্যায় বিভিন্ন পণ্যের ৩ শতাধিক স্টল, হাউজি, পুতুল নাচ, বিচিত্রানুষ্ঠান, মৃত্যুকুপ, নাগরদোলা, যাত্রাপালাসহ বিনোদন মুলক নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।

রাজপুণ্যাহ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসরকারী বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, বান্দরবান রিজিয়ন কমান্ডার ব্রীগেডিয়ার জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, সাবেক পুলিশ সুপার কামরুল আহসানসহ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রাজপুণ্যাহ’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, আদিবাসীদের সাংবিধানিক অধিকার প্রদান করা, তাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা, তাদের অন্তরের বৈশিষ্ঠকে রক্ষা করা, এর সমাধান একমাত্র রাজনৈতিক ভাবে হতে পারে এবং শান্তিপুর্ণ প্রক্রিয়ায় এটা সম্ভব। ভুমি জটিলতা সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি আরো বলেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান বের করে ভুমি সংক্রান্ত বিল সংসদে তোলা হবে এবং সংসদে পাশ হওয়ার পর এই জটিলতা নিরসন হবে। এ সময় তিনি বোমাং রাজার ঐতিহ্য ধরে রাখতে সর্বাত্বক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

(এএফবি/এইচআর/ডিসেম্বর ১৮, ২০১৫)