বাগেরহাট প্রতিনিধি :বাগেরহাটে ৪১টি গির্জায় সব্বোর্চ সর্তকতার মধ্য দিয়ে পালিত হবে খ্রিস্টান ধর্মালম্বিদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘খ্রিস্টমাস ডে’ বা ‘বড়দিন’। বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে বাইবেল পাঠ ও প্রার্থনা মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘খ্রিস্টমাস ডে’র উৎসব শুরু হবে। বাগেরহাটের প্রতিটি গির্জায় খ্রিস্টমাস ডের অনুষ্ঠানের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেখভাল করতে মোতায়েন করা হয়েছে ৫জন করে পুলিশ। বাগেরহাট পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্যা এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত অক্টোবরে পাবনার ঈশ্বরদীতে খ্রিষ্টান মিশন গির্জার এক ফাদারকে সন্ত্রাসীরা গলা কেটে হত্যার চেষ্টা পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে গির্জা ও ফাদারদের উপর সন্ত্রাসী হামরার হুমকি আসতে থাকে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে নিজেকে জঙ্গি সংগঠন আর্ন্তজাতিক ইন্টারন্যাশনাল জিএমবি’র সমন্বয়ক পরিচয়ে এক সন্ত্রাসী মোবাইল ফোনের ক্ষুদে বার্তায় সিলেট ক্যাথলিক ডাইসিস ধর্মপ্রদেশের বিশপ বিজয় এনডি ত্রুুজকে হত্যার হুমকি দেয়। এঘটনার পর সারাদেশে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে ফের আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। এরই প্রেক্ষাপটে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টান ধর্মালম্বিদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘খ্রিস্টমাস ডে’ পালন উপলক্ষে বাগেরহাটে ৪১টি গির্জায় নেয়া হয়েছে সব্বোর্চ সর্তকতা।

বাগেরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মনিরুজ্জামান জানান, বর্তমানে বাগেরহাট জেলার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ৪১টি গির্জা রয়েছে। এরমধ্যে মংলা উপজেলায় ১৯টি, রামপালে ৬টি, মোল্লাহাটে ৯টি, চিতলমারীতে ৩টি, ফকিরহাটে ২টি ও বাগেরহাট সদরে ২টি গির্জা রয়েছে। বাগেরহাট জেলায় প্রায় ২৫ হাজার খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করছে। খ্রিষ্টানদের এসব গির্জার অধিকাংশ ফাদারই বিদেশী নাগরিক। সরাদেশে উগ্র ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক লোকজনের পরিকল্পিত নাশকতার আশংকায় বাগেরহাট জেলায়ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে আতংক রয়েছে। বর্তমান অবস্থায় বাগেরহাট জেলায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে এই আতংকের কথা স্বীকার করেছেন তিনজন ফাদার। তাঁদের এই আতংকের কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মংলার শ্যালাবুনিয়ার খ্রিষ্টান গির্জা ফাদার নরেন, ফাদার বাবুল ও বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি গির্জার ফাদার মার্টিন মন্ডল ।

বাগেরহাট পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্যা জানান, বর্তমান অবস্থায় বাগেরহাট জেলায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ৪১টি গির্জায় ‘খ্রিস্টমাস ডে’ সামনে রেখে সব্বোর্চ সর্তকতা জারি করা হয়েছে। এসব গির্জায় খ্রিস্টমাস ডেতে যোগ দিতে আসা বিদেশীসহ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন ও ফাদারদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি গির্জায় বৃস্পতিবার থেকে ৫জন করে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গির্জাসহ এসব এলাকায় জোরদার করা হয়েছে গোয়ান্দা নজরদারীও।


(এসএকে/এস/ডিসেম্বর২৪,২০১৫)