সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগ নেতার ইন্ধনে এসিড সন্ত্রাসের শিকার হওয়া এক প্রতিবন্ধীর দোকানে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের মারকা গ্রামের অয়েদ আলী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রতিবন্ধী অয়েদ আলী বলেন, তিনি জেলা প্রশাসন ও এসিড সারভাইভার ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান পেয়ে সাড়ে তিন বছর আগে জীবিকা অর্জনের তাগিদে কালীগঞ্জ উপজেলা সদরের কাকশিয়ালী উত্তর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মন্টু হাজীর পেট্রোল পাম্পের সামনে একটি ছোট স্টল দেন। সেখানেই তিনি চা, পান, বিড়ি, সিগারেট বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। শুরুতেই স্টলের জায়গা নিজেদের দাবি করায় স্থানীয় কালিতলা দুর্গাপূজা মন্দিরকে বছরে ৬০০ টাকা করে দিয়ে আসছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে ওই দোকান সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়। বিষয়টি মন্দির কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে তাদেরকে এরপর থেকে কোন টাকা দিতে পারেবন না জানালে তারা ক্ষুব্ধ হন।

গত বছরের ১০ ডিসেম্বর তারালি ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ছোট মন্দিরের সভাপতি দীপঙ্কর ঘোষের উপস্থিতিতে তাকে বছরে দুই হাজার টাকা করে দোকান চালানোর জন্য লিখিত চুক্তি করতে বলেন। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এ চুক্তিপত্র না করলে তাকে উচ্ছেদের হুকুম দেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা। চুক্তি না করায় ১৭ ডিসেম্বর মন্দির কর্তৃপক্ষ তার দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয়। অভিযোগ পেয়ে ওই দিন পুলিশের কথামত মন্দির কর্তৃপক্ষ দোকানের তালা ঝুলিয়ে দেয়। পুলিশ ও মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি করে দোকান চালাতে বলে যায়।

গত ১৯ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হোসেন ছোট, ইউপি সদস্য নূর মোহাম্মদ, গ্রাম পুলিশ আবুল কাসেম, মন্দিরের সভাপতি দীপঙ্কর ঘোষ, সম্পাদক প্রদীপ ঘোষসহ অন্যান্যরা তার দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে ও লুটপাট করে। এ সময় দোকানে অবস্থান করা তার স্ত্রীকে মারপিট করা হয়। এ নিয়ে আদালতে মামলা করায় তিনি (অয়েদ) নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমনকি দোকান চালাতে না পেরে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার প্রতিকার ও জীবন-জীবিকা অর্জনের সুবিধার্থে দোকান চালানোর ব্যবস্থা করতে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

তবে আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হোসেন ছোট ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মন্দির কমিটির দখলে থাকা জমিতে শর্ত সাপেক্ষে স্টল বসিয়েছিলেন অয়েদ আলী। শর্ত না মানায় তার দোকান মন্দিরের মধ্যে সরিয়ে রাখা হয়েছে।

(এসপি/এস/জানুয়ারি০২,২০১৫)