মদন (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি : জন্ম থেকেই পা দুটি উল্টো, বাঁকা, সরু, হাত দুটি বাঁকা। এর পরেও দু’হাত দিয়ে ভর করে  স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলছে আজহারুল ইসলাম। সে এবার উপজেলার বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে জিপিএ ২ দশমিক ৫৫ পেয়েছে।

তার মনের মধ্যে রয়েছে শত ভাগ জোর। এ জন্য বাড়ি থেকে প্রতিদিন ২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে কোন মত হামাগুড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসে আজহারুল ইসলাম। আজহারুল ইসলামের বাড়ি মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বনতিয়শ্রী গ্রামে । বাবা মনির উদ্দিনের ভিটা বাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। তার বাবা দিন মজুরী করে সংসার চালায়।

আজহারুল ইসলামের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ৩ বছর ধরে দু’হাতে ভর করে হামাগুড়ি দিয়ে ২কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করে বিদ্যালয়ে আসে। যদি অটো, কিংবা রিকশায় দিয়ে আসতে হয় হা হলে প্রতিদিন খরচ হয় ৫০ টাকা। আজহারুলের দিন মজুরের বাবার পক্ষে এত টাকা পাবে কোথায়? সোমবার বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার সময় দেখা হয় তার সঙ্গে।

এ সময় আজহারুল ইসলাম ইত্তেফাককে জানায়, লেখা পড়া শিখে আমি একজন সরকারি অফিসার হতে চাই । বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামান তালুকদার বলেন,আজহারুল একজন মেধাবী ছাত্র, আর্থিক সমস্যার কারনে ওকে প্রতিদিন হামাগুড়ি দিয়ে ২ কিলোমিটার রাস্তা আসতে হয়। আমি চাই বিত্তমানরা যেন ওকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ভর্তি ফি, যাবতীয় বই, খাতাসহ সকল প্রকার উপকরণ দেয়া হয়। আমরা তার মাসিক বেতন পর্যন্ত নেইনা।

(এএমএ/এইচআর/জানুয়ারি ১১, ২০১৬)