বাগেরহাট প্রতিনিধি : জায়গা সংক্রান্ত জটিলতার পড়ে পিছিয়ে যাচ্ছে মংলার ৩৩/১১ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ। ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর আওতাধীন ২১ শহর প্রকল্পের অধীনে পদ্মার এ পারের বিভিন্ন স্থানে ১০টি উপকেন্দ্র স্থাপন কাজের মধ্যে ইতোমধ্যেই কয়েকটির শুরু হলেও শুধুমাত্র জায়গার অভাবের কারণে মংলা উপকেন্দ্র নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। যদিও ইতোমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাগেরহাটের মংলা বন্দরসহ আশপাশ এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ৩৩/১১ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্র স্থাপনের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সম্প্রতি তার কার্যাদেশ দেয়াসহ সাইড ডেভেলপমেন্ট করে কাজ শুরুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে চাওয়া এক বিঘা জমি না পাওয়ায় সেটির কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। অথচ এ উপকেন্দ্রটি স্থাপন হলে মংলা এলাকায় অতিরিক্ত ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সংযোজনের পাশাপাশি চারটি ফিডার তৈরির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে।
ওজোপাডিকোর সূত্র আরও জানায়, ২১ জেলা বিদ্যুৎ বিতরণ প্রকল্পের আওতায় পুরাতন বন্দর এলাকার পোর্ট শ্রমিক সংঘের বিপরীতে ফাঁকা জায়গায় ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ প্রক্রিয়া হাতে নেয়া হয়। এজন্য সেখানকার ৩৩ শতক জমি বরাদ্দের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়। গত ৫ মার্চ ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত এক পত্রে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট এলাকায় রুরাল টাইপ উপকেন্দ্র নির্মাণ কাজ হাতে নেয়া হলেও প্রয়োজনীয় জমি না পাওয়ায় নির্মাণ কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। সেজন্য দ্রুত বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি স্থাপনের জন্য মংলা শ্রমিক সংঘের বিপরীতের ফাঁকা জায়গাটি (৩৩ শতক) বরাদ্দ দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
মংলা বন্দরের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানান, বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়া হলেও এখনও পর্যন্ত জমি বরাদ্দের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি। অথচ ইতোমধ্যেই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে কার্যাদেশও দেয়া হয়েছে। আর কাজ শুরুর তিন মাসের মধ্যে উপকেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে এবং এ বছরের জুন মাসের মধ্যেই কাজটি সম্পন্ন করার কথা। কিন্তু যেহেতু এখনও কাজটি শুরুই করা যায়নি সেহেতু আগামী মাসে শেষ করা আদৌ সম্ভব নয়।
ওজোপাডিকো’র একুশ শহর প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সি.এম মোতাহার হোসেন বলেন, ‘প্রকল্পের আওতায় পদ্মার এপারের ১০টি উপ-কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এগুলো হচ্ছে ভাঙ্গা, গোয়ালন্দ, বহরপুর, মধুখালী, পাংশা, শৈলকূপা, মহেশ্বরপাশা, নলছিটি, হাট গোপালপুর এবং মংলা। ১০টির মধ্যে ৬টির কাজ আংশিক হয়েছে এবং মংলা, গোয়ালন্দ ও মহেশপুরের কাজ শুরু করা যায়নি। অপর একটির উন্নয়ন কাজ চলছে’।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘কিছু প্রক্রিয়া শেষ করেই জমি বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। তাছাড়া যেহেতু এটি একটি জনস্বার্থের বিষয় সেহেতু গুরুত্বের সাথেই দেখা হচ্ছে এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে এ ব্যাপারে নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে মংলা পুরাতন শহর এলাকায় আড়াই মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। প্রস্তাবিত উপকেন্দ্রটি স্থাপন হলে ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যাবে। একই সাথে বর্তমানে একটি মাত্র ফিডার থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করায় কোন সমস্যা হলে পুরো এলাকার বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে কাজ করতে হয়।
কিন্তু উপকেন্দ্রটি হলে চারটি পৃথক ফিডার করা যাবে। এতে একটি নির্দিষ্ট এলাকা বন্ধ থাকলে বাকি বৃহৎ এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে। সেই সাথে শিল্প প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক গ্রাহকদের মাঝেও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া যাবে। সেই সাথে লোডশেডিংও কমবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে এ উপ কেন্দ্রটি নির্মাণের চেষ্টা চলছে।
(একে/এএস/মে ৩০, ২০১৪)