বিনোদন ডেস্ক : ঢাকাই ছবিতে জহির রায়হান অনন্য অসাধারণ এক প্রতিভার নাম। তাকে চলচ্চিত্রের অভিভাবকও বলে থাকেন অনেকে। এদেশের সাহিত্যেও তার সফল বিচরণ অম্লান হয়ে আছে।

বরণীয় এই বুদ্ধিজীবী সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকার মিরপুরে নিখোঁজ হন। মুক্তিযুদ্ধকালে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের দ্বারা অপহৃত তার ভাই আরেক বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারকে খুঁজতে গিয়েই নিখোঁজ হন তিনি।

আজ শনিবার, ৩০ জানুয়ারিতে আমরা দাঁড়িয়ে আছি জহির রায়হানের নিখোঁজ হওয়ার ৪৪তম বছরে।

আজকের দিনটিকে ঘিরে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে চলচ্চিত্রাঙ্গনের নানা সংগঠনসহ সাহিত্য-সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি দেশের টেলিভিশন ও অন্যান্য প্রচার মাধ্যমগুলোতেও দেখা যাচ্ছে বিশেষ প্রচারণা ও আয়োজন।

বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, বুদ্ধিজীবী ও লেখক জহির রায়হানের জন্ম ১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট। ফেনী জেলার মজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

১৯৫০ সালে যুগের আলো পত্রিকায় যোগদানের মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত হন জহির রায়হান। পরে তিনি খাপছাড়া, যান্ত্রিক, সিনেমা ইত্যাদি পত্রিকাতেও কাজ করেন। ১৯৫৫ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম গল্পগ্রন্থ সূর্যগ্রহণ।

জহির রায়হানের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো কখনো আসেনি, স্টপ জেনোসাইড, এ স্টেট ইজ বর্ন, জীবন থেকে নেওয়া, কাঁচের দেয়াল ইত্যাদি। তবে জীবন থেকে নেয়া ছবিটি তাকে এদেশের চলচ্চিত্রে অমরত্ব দান করেছে।

সাহিত্য রচনায় শেষ বিকেলের মেয়ে, হাজার বছর ধরে, আরেক ফাল্গুন, বরফ গলা নদী, আর কত দিন, কয়েকটি মৃত্যু, একুশে ফেব্রুয়ারি, তৃষ্ণা ইত্যাদি গল্প-উপন্যাসে আভাস মিলে স্বতন্ত্র আর সাবলীল লেখনীর। তার মধ্যে হাজার বছর ধরে উপন্যাসটিকে বলা হয় জহির রায়হানের অনন্য সৃষ্টি। এটিকে নিয়ে জহির রায়হানের দ্বিতীয় স্ত্রী চিত্রনায়িকা সুচন্দা চলচ্চিত্রও পরিচালনা করেন। ছবিটি বেশ কয়েকটি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলো।

সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি আদমজী পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (মরণোত্তর) লাভ করেন।

এছাড়া চলচ্চিত্র বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ নিগার পুরস্কার, একুশে পদক (মরণোত্তর) লাভ করেন জহির রায়হান।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ৩০, ২০১৬)