কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : ২২ দিন অতিবাহিত হলেও কলাপাড়ার আলোচিত স্কুল ছাত্র তাসিন (৪) হত্যার ঘটনায় ঘাতকদের সনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। দুই দফায় চারদিন শিশু তাসিনের মেঝ চাচী লাভলী বেগমমে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তার কাছে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই রিমান্ড শেষে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এদিকে হত্যাকারীদের সনাক্ত করার জন্য ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা আলামত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য বুধবার সিআইডি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কলাপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. মনিরুজ্জামান এ তথ্য জানান।

এদিকে তাসিন হত্যার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে কলাপাড়া পৌরশহর। হত্যাকারীদের সনাক্ত ও অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে দুই দফায় পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সভা ও মানবন্ধন করেছে সর্বস্তরের মানুষ। ক্লাসবর্জন করে পৌর শহরের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবাদ মিছিল করেছে।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে কলাপাড়া পৌর শহরের রহমতপুর এলাকার নিজ বাড়ির প্রায় একশ ফুট দূরে প্রতিবেশী ছত্তার ফকিরের পুকুর পার থেকে তাসিনের লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। ওই দিন সন্ধায় নিখোঁজ হয়েছিলো তাসিন। এ ঘটনায় তাসিনের পিতা মজিবুর রহমান কলাপাড়া থানায় অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

এদিকে সন্তান হারিয়ে এখন পাগল প্রায় তাসিনের বাবা-মা। ছোট্ট একটি মহল্লার মধ্যে খুন হয় তাসিন। কিন্তু খুনীরা এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় তারা হতাশ। তাসিনের পিতা মজিবুর রহমান জানান, যে স্থান থেকে তাসিনের লাশ উদ্ধার হয়েছে ওই স্থানে একাধিকবার খোঁজ করা হয়েছিলো। কিন্তু সেই পুকুর পাড়ে নিখোঁজের পাঁচ ঘন্টা পর পাওয়া যায় লাশ। তাহলে ওই স্থানে লাশ এলো কিভাবে, কারা ফেলে রেখে গেছে তাকে এ প্রশ্ন তাদের। তাসিনকে যে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে তা ঘটনার পরই নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ ও ডাক্তাররা। তাহলে তাসিনের শরীরে অবশ্যই ঘাতকদের চিহ্ন রয়েছে।

এদিকে কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ মোতালেব তালুকদার প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে বলেছেন, শিশু তাসিন হত্যাকারীদের যেকোন উপায়ে খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। কলাপাড়া থানার ওসি জিএম শাহনেওয়াজ ও ঘটনার পরদিন মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে ঘাতকদের খুঁজে বের করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু গত ২২ দিনেও সনাক্ত হয়নি ঘাতকরা।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কলাপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. মনিরুজ্জামান জানান, পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে তাসিন হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে। এখন ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যেগ নিয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল হাতে পেলে হত্যাকারীদের দ্রুতই গ্রেফতার করা হবে।

(এমকেআর/এএস/০২ মার্চ, ২০১৬)