বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবান থেকে মায়ানমারে পাচার করা ১১ শিশু কিশোরী উদ্ধারের পর পুলিশ হেফাজতে ডাক্তারী পরীক্ষা নিয়ে ধুম্ব্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। পক্ষে বিপক্ষে আজ মঙ্গলবার সকালে প্রেসক্লাব চত্তরে এ উপলক্ষে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন পালন করেছে ২পক্ষ।

১১টায় একই স্থানে সমাবেশ ও মানববন্ধনের ডাক দেয়। অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকায় পুলিশ ১১টায় পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ এবং বেলা ১২টায় কলেজ শিক্ষার্থী ও ১১ শিশুর অভিবাবকদের মানববন্ধন করার অনুমতি দেয়।

পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ও মানববন্ধনের প্রথমে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন বান্দরবান পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক উসাইমং মারমা, বান্দরবান পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের (পিসিপি’)র জেলা সভাপতি উবাসিং মারমা সভাপতিত্বে বান্দরবান পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি নুশৈমং মারমা, সাধারণ সম্পাদক অজিত তংচংঙ্গ্যা প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা মায়ানমার থেকে ফিরিয়ে আনা ১১ শিশু কিশোরীকে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে বলেন, পুলিশ প্রজাতন্ত্রের প্রহরী। সারাদেশে বসবাসরত মানুষের জানমালের হেফাজতকারী তারা। কিন্তু গত শনিবার সন্ধ্যার পর ডিবি পুলিশ হেফাজতে রাখা ১১ শিশু কিশোরীকে জোর পুর্বক স্বাক্ষ্য আদায়ের নামে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। বক্তারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১১ শিশু কিশোরীকে তাদের অভিবাবকের কাছে হস্তান্তরসহ পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন।

অপরদিকে বান্দরবানের কয়েকটি শিক্ষা শতাধিক ছাত্রছাত্রী ও ১১ শিশু-কিশোরীর অভিবাবকরা বেলা ১২টায় মানববন্ধন ও সমাবেশ করে। মানববন্ধনোক্তর সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রুবেল কান্তি দাশ, উবা হাই মারমা, এন.এইচ বাবলু প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, তিন পার্বত্য জেলা জেলা ধর্মীয় ও শিক্ষার নামে অসংখ্য নারীকে বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে একটি চক্র। এই চক্রটির মুখোশ উন্মুচন হতে শুরু করায় একটি পক্ষ তাদের পক্ষে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ১১ শিশু-কিশোরীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা বন্ধ করতে চক্রটি নানা কৌশল অবলম্বন করে বিষয়টি ভিন্নখাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। বান্দরবান থেকে যেন আর কোন নারী শিক্ষার নামে বিদেশে পাচার না হয় সে বিষয়ে প্রশাসনকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। বক্তারা, এ ঘটনায় দোষি ব্যাক্তিদের খুজে বের করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান।

এদিকে ফিরে আসা পাই নু চিং মারমা’র পিতা মং প্রু হ্লা মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়ে পুলিশি হয়রানী কিংবা নির্যাতনের শিকার হয়নি। পুলিশ ঘটনার সত্যতা উদঘাটনের চেষ্টা করছে। আমি দোষি ব্যক্তিদের শাস্তি চাই এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল কার্যক্রম শেষ করে মেয়েকে সুস্থ্য শরীরে বাড়ী নিয়ে যেতে চাই।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, ১১ শিশু-কিশোরীকে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, বিজ্ঞ আদালতের পরামর্শ ও নির্দেশনায় এবং পুলিশ সুপারের তত্বাবধানে স্পর্শকারত এই ঘটনাটির সুস্থ সমাধান করার চেষ্টা করছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত সোমবার আদালতের নির্দেশে ৩ শিশুকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। অপর ৮জনকে প্রাথমিকভাবে ধর্ষনের আলামত পাওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

(এএফবি/এএস/মার্চ ২২, ২০১৬)