বাগেরহাট প্রতিনিধি :বাগেরহাটে নির্বাচন পরবর্তী সহিসতায় বিভিন্ন এলাকায় নারী-শিশুসহ অর্ধশত আহত হয়েছেন। এসময় হামলাকারীরা প্রতিপক্ষের পাঁচটি দোকান ভাংচুর করে। বৃহষ্পতিবার ভোররাত থেকে দুপুর বাগেরহাট সদর, কচুয়া, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীদের হামলা-পাল্টা হামলায় এসব আহতের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় আহতদের জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কচুয়া উপজেলার রাঢ়িপাড়া ইউনিয়নের চরকাঠি গ্রামের হামলার শিকার শান্তনা রাণী সাহা জানান, ইউপি নির্বাচনে রাঢ়িপাড়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে সাধারন সদস্য পদে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা প্রভাস সাহা বিজয়ী হন। বৃহষ্পতিবার সকালে তিনি ২০/২৫টি মোটরসাইকেলে তার সমর্থকদের নিয়ে চরকাঠি গ্রামে আসেন। তাকে নির্বাচনে আমরা ভোট দেইনি বলে অভিযোগ করে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। তারা আমার মুদি দোকানটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছেশান্তনা রাণী সাহা, পাপিয়া সাহা, নুর মোহম্মদ শেখ, বিনয় সাহা ও তরুন সাহাসহ ২০জন নারী-শিশু আহত হয়। এদর মধ্যে গুরুত্বর আহত তিনজনকে কচুয়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মোরেলগঞ্জে পুটিখালী, বারইখালী, চিংড়াখালী ও মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নে নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় নারী শিশুসহ কমপক্ষে ২০জন আহত হয়েছে। এসময় ৪টি বসতবাড়ি ও ৬টি দোকান ভাংচুর ও মালামাল লুটের ঘটনা ঘটেছে। চিংড়াখালী ইউনিয়নে ৩ নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য পদে মনির শেখ পরাজিত হয়ে স্থানীয় নারিকেলবাড়িয়া বাজারে বিজয়ী প্রার্থীর চার সমর্থক আলীম হাওলাদার, কবির হাওলাদার, কাওসার হাওলাদার ও শামীম বক্সের দোকান ভাংচুর করে পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর কর্মীরা।

বারইখালী ইউনিয়নের কাশ্মীর গ্রামের রব হাওলাদার, আনোয়ার হাওলাদার, নজরুল ইসলাম হাওলাদারের বসতবাড়ি, আ.লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস, জলিল হাওলাদার ও আবুল হোসেন শেখের দোকান ভাংচুর করেছে ওই এলাকার পরাজিত মেম্বার প্রার্থী ফজলু হাওলাদারের কর্মীরা। এই হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে আ. রব হাওলাদার(৫৫), মনিরা আক্তার(১৩) ও সামিয়া আক্তার(৮)। এছাড়াও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন রিনা বেগম(২৫) ও মিরাজ হাওলাদার(৩৫)। হামলাকারীরা রব হাওলাদারের ঘর থেকে ১শ’ ইউরোসহ দেড় লাখ টাকার মালামাল লুটে নেয় বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে। এ ইউনিয়নের শেখপাড়া গ্রামে বিজয়ী ও পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত রফিকুল হাওলাদার(৩৮) ও হালিম হাওলাদারকে (২৮) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এসময় রফিকুল ইসলামের বসতঘরটি ভাংচুর ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

একইদিন বিকেলে মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ভাইজোড়া গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা আব্দুল হামিদ শিকদার(৬০)কে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। তাকে খুলানা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই উপজেলার পুঁটিখালী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে পরাজিত প্রার্থী মিলন শেখ অভিযোগ করেন, বিজয়ী সদস্য মহসীন খানের নের্তৃত্বে একদল সমর্থক আমাকেসহ আমার ৮জন সমর্থককের ওপর হামলা চালিয়েছে। ওই হামলায় গুরুতর আহত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মল্লিক জাকির হোসেনকে দুপুর ২টায় মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শরণখোলার রায়েন্দা ইউনিয়নে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় মহিলাসহ ৪জন আহত হয়েছে।

এছাড়া সদর উপজেলার খানপুর ও দেপাড়ায় আওয়ামী লীগের বিজী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় ২ জন আহত হয়েছেন। তাদের বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।


(আইএইচএস/এস/মার্চ২৫,২০১৬)