সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : নৌকা প্রতীকে ভোট না দিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে ভোট দেওয়ায় পাঁচটি পরিবারের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট শেষে বিরাণ ভূমিতে পরিণত করা হয়েছে।

ভাঙচুর ও লুটপাটে বাধা দেওয়ায় ওই সব পরিবারের সাত নারী সদস্যকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে।

শনিবার ভোরে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কাপষণ্ডা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এলাকায় পেলে জীবনহানির আশঙ্কায় ওইসব পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

আহতরা হলেন, আশাশুনি উপজেলার খাজরা গ্রামের রাবেয়া খাতুন, সুফিয়া খাতুন, রাশিদা বেগম, নাজমা খাতুন, রেবেকা খাতুন, মনোয়ারা খাতুন ও নূরজাহান।

আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের কাপষণ্ডা গ্রামের কলুপাড়ার এবাদুল ঢালী জানান, দীর্ঘকাল ধরে তারা আওয়ামী লীগে ভোট দিয়ে আসছেন। খাজরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল কুদ্দুস দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য তিনি ও তার ভাইয়েরা প্রচার প্রচারণা চালান। তিনিসহ তাদের কয়েকটি পরিবারের সদস্যরা গত ২২ মার্চ ঘোড়া প্রতীকে ভোট দেন। এতে ক্ষুব্ধ ছিল নৌকা প্রতীক প্রার্থী শাহানেওয়াজ ডালিম। ভোটে জয়লাভ করেন শাহানেওয়াজ ডালিম। পক্ষে ভোট না দেওয়ার কারণে ২৩ মার্চ সকালে তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে এলাকা ছাড়া করে দেওয়ার হুমকি দেয় শাহানানেওয়াজ ডালিমের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য আইয়ুব আলী সানা, হাকিম সানা।

এবাদুল ঢালী আরো জানান, শনিবার ভোর চারটার দিকে আইয়ুব আলী সানা, হাকিম সানা, হান্নান সানা , আজিজ গাজী, আসাদুল সরদার, আশরাফুল মোড়ল, কৃদ্দুস মোড়ল ও ইউসুফ সরদারের নেতৃত্বে দেড় শতাধিক লেঅক হাতে দা, লাঠি, কুড়াল, সাবল নিয়ে তারসহ আপিল গাজী, আলতাফ হোসেন বকুল ঢালী, রসুল ঢালী ও নন্টু ঢালীর বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা কয়েকটি বোমা ফাটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। একে একে তারা লুটপাট করে পাঁচটি পরিবারের বসত ঘর, রান্নাঘর ও গোয়াল ঘর ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। বাধা দেওয়ায় ওইসব পরিবারের সাত নারী সদস্যকে পিটিয়ে জখম করা হয়। ঘরবাড়ি ভাঙচুরের পর তারা ঘরের চাল, আসবাবপত্র, হাঁড়ি, থালা বাসন লুট করে নিয়ে যায়। পরে ওইসব বাড়ির দেওয়াল মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে বিরাণ ভূমিতে পরিণত করে। বর্তমানে হামলাকারিরা ওই জমি দখলে নিয়েছে।

এ ব্যাপারে আইয়ুব আলী সানা জানান, তাদের জমি এক বছর আগে অবৈধভাবে দখলে নিয়েছিল নণ্টু ঢালীসহ পাঁচজন। শনিবার সকালে তারা ওই জমি দখলে নিয়েছেন। এতে চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজের কোন ভূমিকা নেই।

আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুন্সি আসাদুজ্জামান জানান, এ নিয়ে রবিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত তার কাছে কোন লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেনি।


(আরএনকে/এস/মার্চ২৭,২০১৬)