আল ফয়সাল বিকাশ, বান্দরবান :বান্দরবানের হ্লাপাইক্ষ্যং বৌদ্ধ বিহারের পরিচালক ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা’র শশুর উ ওয়ারিন্দা ভিক্ষুকে ঐতিহ্যবাহী সইন নৃত্যে এবং বাজীর বিস্ফোরিত আগুনে দাহ করা হয়।

২দিনব্যাপী আয়োজিত অন্তোষ্টিক্রিয়ার এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার নারী-পুরুষের সমাগম ঘটে। সেই সাথে কিশোর-কিশোরীদের সমন্বয়ে ১১টি সইন দল “লেলে-লেলে, ময়-ময়” এই লোকগানের সুরে ও তালে তাদের নৃত্যকলা পরিবেশন করেন।

অন্তোষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা। বিশেষ অতিথি হিসেবে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি’র সহধর্মীনী মে হ্লা প্রু, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নুরুল আবছার, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুস, রোয়াংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্য বা মং মারমা, পৌর মেয়র মোঃ ইসলাম বেবী, জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষি পদ দাশ, মোজাম্মেল হক বাহাদুর, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ শফিউল্লাহসহ জেলা আওয়ামীলীগ ও মহিলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা জানান, গত ২৮ ফেব্রুয়ারী উ ওয়ারিন্দ ভান্তে পরলোকগমন করেন। মারমা সমাজের রীতি অনুযায়ী দীর্ঘ ১ মাস কফিনে রাখার পর আনুষ্ঠানিকভাবে তার অন্তোষ্টিক্রিয়ার মাধ্যমে শবদাহ করা হয়। বিশেষ করে বৌদ্ধ বিহারের ভিক্ষু এবং রাজাদের মৃত্যুর পর শবদাহ অনুষ্ঠানটি জাঁকজমকভাবে করা হয়। এ ক্ষেত্রে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পর্ব শেষ করে খোলা মাঠে প্রতীকি কফিন নিয়ে যুবক-যুবতীরা সইন নৃত্য করে থাকে। আগে এই ঐতিহাসিক নৃত্যটি যুবকরা পরিবেশন করলেও এখন যুবতী নারীরাও অংশ নিচ্ছে সইন নৃত্যে। সইন নৃত্য শেষ করার পর বারুদের তৈরী বাজী ফুটিয়ে বা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কফিনে আগুন ধরিয়ে দিয়ে মৃতের লাশ দাহ (পোড়ানো) করা হয়।

উ ওয়ারিন্দা ভিক্ষুর শেষ কৃত্যনুষ্ঠানের শেষ দিনে অর্ধশতাধিক ভিক্ষু ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। এ সময় ভিক্ষুরা ধর্মদেশনা দেন এবং মৃত ভিক্ষুর মুক্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করেন।



(এএফবি/এস/মার্চ৩১,২০১৬)