বাগেরহাট প্রতিনিধি :শিলা বৃষ্টিতে বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের আটটি গ্রামের প্রায় দুই সহস্রাধিক টিনের তৈরী বসত বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও পুলিশ ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শুক্রবার ভোরের শিলা বৃষ্টিতে কচুয়া উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের সোনাকান্দা, জোবাই, বিষেরখোলা, মাদারতলা, বটতলা,সাহসপুরসহ অন্তত আটটি গ্রামের টিনের তৈরী দুই সহস্রাধিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

শুক্রবার বিকালে কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহবুবুর রশিদ ক্ষতিগ্রস্থদের বাড়িঘর পরিদর্শন করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরী করে আর্থিক সহায়তার আশ^াস দেয়া হয়েছে।

এসব ঘর বর্তমানে বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। টিন দিয়ে তৈরী করা এসব বসত ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।

বিষেরখোলা গ্রামের ইলিয়াস হোসেন দুলাল ও পূর্ব গজালিয়া গ্রামের যমুনা রাণী বিশ্বাস বিকালে এই প্রতিবেদককে বলেন, প্রতি রাতের মত ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ শিলা বৃষ্টির শব্দে ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখি মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির সঙ্গে বড় বড় (তিন থেকে চারশ গ্রাম ওজন) শিলাও পড়তে থাকে। ওই শিলা টিনের চালে পড়ে বড় বড় অসংখ্য ছিদ্র হয়ে ঘরের ভেতরে পড়তে থাকে। শিলায় আমার বসত ঘরের টিন ছিদ্র হয়ে যাওয়ায় এই ঘর মেরামত না করে এখন আর বসবাস করা যাবেনা।

গজালিয়া বাজারের ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বলেন, টিন দিয়ে তৈরী বাজারের প্রায় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে মালামাল ভিজে ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

গজালিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইসহাক আলী বিকালে এই প্রতিবেদককে বলেন, শুক্রবার ভোরে মূষলধারে বৃষ্টির সাথে বড় বড় শিলা পড়ে। শিলা বৃষ্টিতে আমার ওয়ার্ডে যেসব বসত ঘর টিন দিয়ে তৈরী করা ছিল তার অধিকাংশ শিলা পড়ে ছিদ্র হয়ে গেছে। ঘরের ভেতর থেকে এখন আকাশ দেখা যাচ্ছে। ওইসব ঘর একেবারেই বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।

গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বিকালে এই প্রতিবেদককে বলেন, এই ইউনিয়নে প্রায় চার হাজার বসত ঘর (খানা) রয়েছে। এরমধ্যে শুক্রবারের শিলা বৃষ্টিতে প্রায় তিন সহ¯্রাধিক টিনের তৈরী স্থাপনার চাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যা বসবাসের অনুপোযোগি হয়ে পড়েছে। আকষ্মিক হওয়া শিলা বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েছে এখানকার নিন্ম আয়ের মানুষ।

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহবুবুর রশিদ ক্ষতিগ্রস্থদের বাড়িঘর পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, শিলা বৃষ্টিতে গজালিয়া ইউনিয়নের অন্তত আটটি গ্রামের টিন দিয়ে তৈরী করা প্রায় ৮০ ভাগ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এরমধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছি। ওইসব এলাকার নিন্ম আয়ের ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাশ্বতী এদবর বলেন, শিলা বৃষ্টিতে প্রায় ২০০ হেক্টর জমির বোরো ধান ও ১০ হেক্টর জমির ভুট্টার ক্ষতি হয়েছে।


(এসএকে/এস/এপ্রিল০১,২০১৬)