রাবি প্রতিনিধি :ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মজুমদারকে বাধ্যতামূলক অবসরে দেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ৪৬৫তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আমজাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। শাস্তিপ্রাপ্ত অধ্যাপক কামরুল হাসান মজুমদার বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ছিলেন।

সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। ওই বছর নভেম্বরে ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে কামরুল হাসান মজুমদারকে বিভাগের পরীক্ষা ও ছাত্রীদের গবেষণা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিপীড়ন নিরোধ কমিটির তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। ২০১৫ সালের ২৭ এপ্রিল অভিযুক্ত শিক্ষককে চাকুরিচ্যুত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি।

নিপীড়ণ নিরোধ কমিটির সুপারিশ সিন্ডিকেটে ৪৬১তম সভায় উত্থাপন করা হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচর্য ও অভিযুক্ত শিক্ষকের সহকর্মী অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান পুনরায় তদন্তের দাবি জানায়। পরে কোষাধ্যক্ষ সায়েন উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি রিভিউ কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি পুন:তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া সত্বেও বিশেষ বিবেচনায় তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সুপারিশ করে।

তবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান এ সিদ্ধান্তে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছেন। তিনি সভায় এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটির গঠন ও কার্য প্রক্রিয়ায় সমস্যা আছে বলে মতামত দেন। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের মধ্যে বাকবিতন্ডাও হয় বলে দু’জন সিন্ডিকেট সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা যায়, অধ্যাপক কামরুল হাসান মজুমদার ওই ছাত্রীকে মোবাইলে একাধিকার আপত্তিকর প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবে সম্মত হলে বিভাগে ভালো ফলাফলের নিশ্চয়তাসহ শিক্ষক হওয়ার লোভনীয় সুযোগের ব্যাপারে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেন। ওই ছাত্রী তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন।

ছাত্রী লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, প্রথম দিকে তিনি শিক্ষককে নানাভাবে নিবৃত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু দিন দিন শিক্ষকের হয়রানির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।



(ওএস/এস/এপ্রিল২২,২০১৬)