স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সরকারের উচ্চপর্যায়ের নানা মন্তব্যে শঙ্কিত সাংবাদিক শফিক রেহমানের স্ত্রী তালেয়া রেহমান। তিনি এই বক্তব্যকে ‘একপেশে, অসত্য ও বিকৃত তথ্য উপস্থাপন’ বলে দাবি করেছেন।

সোমবার ইস্কাটনে নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে তালেয়া রেহমান এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের বক্তব্যে আমি শঙ্কিত যে এ মামলার তদন্তকাজ সঠিক পথে এগোবে কি না এবং আমরা ন্যায়বিচার পাব কি না?’ তালেয়া রেহমান দাবি করেন, শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ফেসবুক পেজে একর পর এক মিথ্যা স্ট্যাটাস দিয়ে যাচ্ছেন। এতে শফিক রেহমানের মানহানি ঘটছে, অন্যদিকে মামলার তদন্তকাজকে প্রভাবিত করছে। জয় সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাই এ সংশয় জাগা অমূলক নয় যে উদ্দেশ্যমূলক এ মামলাটির তদন্তকাজও উদ্দেশ্যমূলকভাবেই এগোচ্ছে।

তালেয়া রেহমান শফিক রেহমানকে দেশপ্রেমিক সাংবাদিক উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে দেওয়া মামলা প্রত্যাহার, রিমান্ড বাতিল ও মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শফিক রেহমান গুরুতর অসুস্থ। এটি জানানোর পরও গ্রেফতারের পর থেকে তাঁকে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়নি। তিনি বলেন, ‘বয়স, অসুস্থতা ও রিমান্ডে নির্যাতনের ফলে তাঁর জীবনহানির আশঙ্কা করছি।’ তিনি আরও বলেন, আমেরিকার আদালতে মামলাটি এক বছরেরও আগে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। সেই মামলার সূত্র ধরে শফিক রেহমানের মতো একজন সাংবাদিককে গ্রেফত্র ও রিমান্ড শুধু অমানবিকই নয়, অসভ্যতাও।

তালেয়া রেহমান দাবি করেন, প্রথম দফা রিমান্ডের পর আদালতে শফিক রেহমানের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘জোর করে তাঁর কাছ থেকে মিথ্যা স্বীকারোক্তি নেওয়া হতে পারে। আদালতে শফিক রেহমানকে বিষণ্ন ও ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। মশার কামড়ে তিনি ঘুমাতে পারেননি। তাঁর হাতের কয়েক জায়গায় ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন হয়েছে বলে অনুমান করছি।’ তালেয়া রেহমান দাবি করেন, ‘ভয়ে অনেক কথাই তিনি আমার সঙ্গে শেয়ার করতে চাননি।’

তালেয়া রেহমান বলেন, জয়কে নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্রের সঙ্গে শফিক রেহমান জড়িত ছিলেন না। তবে এই বিষয়টি নিয়ে যখন যুক্তরাষ্ট্রে আলোচনা চলছিল, তখন শফিক রেহমান ঘটনা জানার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। এফবিআইয়ের ল্যাস্টিকের সঙ্গে কথাও বলেছেন। তবে কোনো ঘুষ লেনদেন তাঁর অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে হয়নি। শফিক রেহমান জয়ের বিষয়টি আগেই জানলেও তিনি (তালেয়া রেহমান) পরে জেনেছেন।

(ওএস/এএস/এপ্রিল ২৫, ২০১৬)