কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ময়লার ভাগাড়ের মধ্যেও অপ্রকৃতস্থ্য (পাগল) মায়ের নিরাপদ সন্তান প্রসবে সহায়তা প্রদানকারী তিন নারী সাহসীকাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। রবিবার সকালে কলাপাড়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

“নারী সাহসীকাদের সংবর্ধনা” অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উন্নয়ন সংস্থা সংগ্রাম’র নিবার্হী পরিচালক চৌধুরী মো.মাসুম। প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব তালুকদার। বিশেষ হিসাবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মাসুদ হাসান পাটোয়ারী, ভাইস চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল, নারী ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস জাহান, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এইচ এম মাহাবুব আলম। বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির, প্রেসক্লাব সভাপিত মেজবাহউদ্দিন মাননু, সাংবাদিক নেছারউদ্দিন আহমেদ টিপু, মাসউদ সিকদার, মো.ফারুক সিকদার ও সহায়তাকারী স্বাস্থ্যকর্মী জুলিয়া নাসরিন প্রমুখ।

উন্নয়ন সংস্থা সংগ্রাম (সংগঠিত গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচীর) আয়োজনে এ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সন্তান প্রসবে সহায়তাকারী জুলিয়া নাসরিন, হাসিনা বেগম ,রেহেনা বেগমকে নগদ দুই হাজার টাকা ,একটি শাড়ি ও নিজেদের ছবি সম্বলিত মগ প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য গত ১১ এপ্রিল রাতে কলাপাড়া পৌর শহরের লঞ্চঘাটের আইডব্লিউটি’র বিল্ডিংয়ের নিচের ময়লার ভাগাড়ে অপ্রকৃতস্থ্য মা সন্তান প্রসব করে যন্ত্রনায় ছটফট করছে। ওই মায়ের দুই পায়ের ঝাঁকুনিতে পড়নের পাজামায় আটকে থাকা সদ্যজাত পুত্র শিশুটি যেন বারবার আঘাত পাচ্ছে। আগেই শ্যাতশ্যাতে ওই এলাকায় রক্তে আরও কর্দমাক্ত হয়ে গেছে। শিশুটি মায়ের পায়ের আঘাতে একটু পরই জোড়ে চিৎকার দিয়ে উঠছে। তখনও তার নাড়ি কাটা হয়নি। ময়লায় ফুটফুটে শিশুটি কালোবর্ণ হয়ে গেছে।

গভীর রাতে সদ্যজাত শিশুর কান্নার শব্দ শুনে দৌড়ে আসেন পাশের একটি খাবার হোটেলের মালিকের স্ত্রী হাসিনা বেগম এবং মাছ বাজার এলাকার খুদে দোকানদার রেহেনা বেগম। তাঁদের সহায়তায় গভীর রাতে এগিয়ে আসেন স্বাস্থ্য সহকারী জুলিয়া নাসরিন। তাঁদের আন্তরিকতা ও সাহসীকতায় রক্ষা পায় ওই পাগলী ও তাঁর সন্তান। বর্তমানে ওই শিশুটি সমাজসেবা কর্মকর্তার তদারকিতে রয়েছে।

(এমকেআর/এএস/এপ্রিল ২৫, ২০১৬)