কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : বসত ভিটা ও সহায় সম্বল রক্ষায় শতশত নারী-পুরুষ এবং স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ মিছিল, সামাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার টিয়াখালী ইউনিয়নের পূর্ব টিয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বুধবার সকালে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সেনা কল্যাণ সংস্থার নামে টিয়াখালী ইউনিয়নের ৫,৬ ও ৭ নং ওয়ার্ডের ভুমি অধিগ্রহন প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে এ বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেণ টিয়াখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সুজন মোল্লা। বক্তব্য রাখেন, কৃষক রাজ্জাক মুসল্লী, নুরুদ্দিন খান, রশিদ হাওলাদার, আপ্তের হাওলাদার, মো. অলিউল্লাহ, মাকসুদ তালুকদার, হাসান মোল্লা, পান্নু মোল্লা, জাহানারা বেগম, মোখলেসুর রহমান, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। সমাবেশ শেষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেণ মো. মাহমুদুল হাসান সুজন মোল্লা। এরপর এক বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।

গ্রামবাসীরা জানান, সেনা কল্যান সংস্থা যে জায়গা নেয়ার জন্য সীমানা চিহ্ন দিয়েছে সেখানে কৃষিজমি-বাড়িঘরের পাশাপাশি ১০টি স্কুল, ১৫টি মসজিদ, চারশ বাড়ি-ঘর, চারটি মাদ্রাসা, দেড়শ গভীর নলকুপ ও শত শত কবরস্থান রয়েছে। কৃষি নির্ভর এতদাঞ্চলের মানুষ ফসলি জমি হারালে না খেয়ে মরবে।

কৃষক শফিক শরীফ জানান, “পায়রা সমুদ্র বন্দর, তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রে সরকার জমি নিয়েছে। জাতীয় স্বার্থে এলাকার মানুষ নিজেদের সমস্যা ভুলে গেছে। কিন্তু এখন সেনা কল্যান সংস্থার নামে জমি অধিগ্রহনের চেষ্টা চলছে। বসত ঘর, ভিটা, জমি এমনকি কবরস্থানেও লাল নিশান টানিয়ে দিচ্ছে। কোন বানিজ্যিক সংস্থাকে এক ইঞ্চি জমিও বিনা বাধায় গ্রাম দিবে না বলে তিনি জানান।

রাজ্জাক মুসল্লী বলেন, ‘আমরা দিন আনি দিন খাই, বান্দের (বাঁধ) বাইরে থাহি। সেনা কল্যানকে এই জমি দেওয়া যাইবে না।’ নুরুদ্দিন খান বলেন, ‘ আমাদের বাড়িঘরে আমরা থাকতে চাই। সরকারের জায়গা দরকার দিয়েছি। জান দেব, কিন্তু কোন সংস্থাকে জায়গা দেব না।’

টিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাহমুদুল হাসান সুজন মোল্লা বলেন, সেনা কল্যান সংস্থার লোকজন গ্রামবাসীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তিনি টিয়াখালী ইউনিয়নের ৫,৬ও ৭ নং ওয়ার্ডের জনগনের ভিটেবাড়ি, জমি যাতে অন্য কেউ বা সংস্থা দখল করতে না পারে এ জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেণ।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ হাসান পাটোয়ারী জানান, যা কিছুই করা হবে জনগণের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই হবে। এখানে কোন ভুল বোঝাবুঝির কিছু নেই।

(এমকেআর/এএস/এপ্রিল ২৭, ২০১৬)