কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর ওড়না টেনে নিয়ে স্কুলের সামনে শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিন বখাটেকে প্রকাশ্যে সালিশে শুধু কয়েকটি চড় ও জুতা পেটা করে ছেড়ে দেয়ায় ক্ষোভে শনিবার অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে আসেনি। অভিভাবকদের দাবি তিন বখাটে রনি, প্রিন্স ও হুমায়নের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয়া হলে স্কুলে পাঠাবে না মেয়েদের। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার চম্পাপুর ইউনিয়নের উত্তর পূর্ব পাটুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ছাত্রী শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে।

চম্পাপুর ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য জানান, শনিবার অধিকাংশ ছাত্রী বিদ্যালয়ে আসেনি। কারণ হিসেবে তিনি জানান, ওই বখাটেদের বিরুদ্ধে যারা সাক্ষী দিয়েছে তাদের আবার হয়রানী করতে পারে এ আশংকায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে সাহস পাচ্ছে না। গত শুক্রবার সকালে অধিকাংশ গ্রামবাসী ও সালিশদাররা তিন বখাটেকে আইনের হাতে তুলে দেয়ার দাবি করলেও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির এক সদস্যসহ অন্য দুই জন বখাটেদের পক্ষ নেয়ায় তাদের আইনের হাতে তুলে দিতে পারেণ নি।

গত বুধবার ২৭ এপ্রিল সকালে স্কুলে আসার পথে ওই স্কুল ছাত্রীকে স্কুলের সামনেই ওড়না টেনে নিয়ে শ্লীলতাহানি করে চম্পাপুর ইউনিয়নের হারুন মুন্সীর ছেলে রনি, সোহেল মুন্সীর ছেলে প্রিন্স ও মোটরসাইকেল চালক হুমায়ন। ওই ছাত্রী এ ঘটনা শিক্ষক ও সহপাঠীদের জানালে বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে ছাত্র-শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় ক্লাস বর্জন করে। স্থানীয়দের চাপের মুখে শুক্রবার সালিশ বৈঠক বসলেও শুধু কয়েকটা থাপ্পড় ও জুতাপেটা করেই তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

একাধিক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা এখন আতংকে আছেন। সালিশে তাঁরা প্রকাশ্যে বলেছিলেন তিন বখাটেকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে। কিন্তু তাদের ছেড়ে দেয়ায় এখন ভয়ে মেয়েকে আজ স্কুলে পাঠান নি। রাগের কারণে এখন ওই বখাটেরা কার উপরে প্রতিশোধ নেয় কে জানে।তাই অনেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেয়েকে ওই স্কুল থেকে নাম কাটিয়ে অন্য স্কুলে ভর্তি করবেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বজলুর রহমান জানান, বখাটেদের শাস্তি না হওয়ায় স্কুলে আজ উপস্থিতি কমে গেছে। তারাও চেয়েছিলেন ওই তিন বখাটের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হোক। কিন্তু একটি মহলের চাপে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যায়নি।

চম্পাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রিন্টু তালুকদার জানান, ওই তিন বখাটের কারণে ওই স্কুলের একাধিক মেয়েকে অভিভাবকরা বাল্যবিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। তারও চেয়েছিলেন তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে কিন্তু ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ওই তিন বখাটেকে ক্ষমা করে দেয়ায় আজ এই অবস্থা।

(এমকেআর/এএস/এপ্রলি ৩০, ২০১৬)