বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোল্লাহাটে চাঞ্চল্যকর ঢাকা ইডেন কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নববধূ শরীফা আক্তার পুতুলকে (২১) হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। বৃহষ্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মিজানুর রহমান খান এই রায় ঘোষণা করেন।

নিহত শরীফা আক্তার পুতুল জেলার মোল্লাহাট উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের উদয়পুর দৈবকান্দি গ্রামের মো. আবু দাউদের মেয়ে এবং ঢাকা ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইতিহাস বিভাগের সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

দন্ডিত স্বামী শিকদার শিকদার মাহমুদুল আলম (৩৫) একই গ্রামের প্রয়াত শিকদার সামছুল আলমের ছেলে। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পেয়ে পলাতক রয়েছেন।

এই ঘটনার পর ঢাকা ইডেন কলেজের সহপাঠিরা ও বাগেরহাটের বিভিন্ন সংগঠন হত্যাকারী স্বামী মাহমুদুল আলমের বিচারের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলী শেখ মোহম্মদ আলী মামলার বরাত দিয়ে বলেন, আত্মীয়তার সূত্র ধরে ইডেন কলেজের ছাত্রী শরীফা আক্তার পুতুলের সাথে মাহমুদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে ঘটনার প্রায় ছয় মাস আগে শরীফা ও মাহমুদ গোপণে বিয়ে করেন। পরে ঘটনা জানাজানি হলে উভয় পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নিয়ে ২০১৩ সালের ১০ মে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে দেন। বিয়ের তিনদিন পর ১৩ মে রাত দুইটার দিকে মাহমুদ তার নববিবাহিতা স্ত্রী শরীফার মুঠোফোনে অশ্লীল ক্ষুদেবার্তা দেখে ক্ষুব্ধ হন। পরে পুতুলের অন্য কারো সঙ্গে পরকীয়া প্রেম রয়েছে এই অজুহাতে ক্ষিপ্ত হয়ে শরীফাকে ঘরে থাকা দা দিয়ে জবাই করে হত্যা করেন।

হত্যার পর রাতেই মাহমুদ কীটনাশক পান করে মোল্লাহাট থানায় গিয়ে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। পরে পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে তালাবদ্ধ ঘরের ভেতর থেকে শরীফার বিবস্ত্র জবাই করা লাশ ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাপাতি উদ্ধার করে। ঘটনার পরদিন ১৪ মে নিহত শরীফার বাবা মো. আবু দাউদ বাদী হয়ে মোল্লাহাট থানায় জামাতা মাহমুদুল আলমের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনম খায়রুল আনাম তদন্ত শেষে ওই বছরের ১০ নভেম্বর মাহমুদুল আলমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতের বিচারক ১৪ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এই রায় ঘোষণা করেন।

নিহতের বাবা মো. আবু দাউদ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, খুনী মাহমুদুল আলমকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে তার মৃতুদন্ড দ্রুত কার্যকর করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

(একে/এএস/মে ১২, ২০১৬)