স্টাফ রিপোর্টার : সাংবাদিক প্রবীর সিকদার আজ বুধবার স্থায়ী জামিন পেয়েছেন। দৈনিক বাংলা ৭১, অনলাইন নিউজ পোর্টাল উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ত্রৈমাসিক উত্তরাধিকার ৭১-এর সম্পাদক ও প্রকাশক প্রবীর সিকদার বুধবার দুপুরের পরে ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে হাজির হলে বিচারক কে এম শামসুল আলম তাকে ওই জামিন দেন।

প্রবীর সিকদারের পক্ষে আইনী লড়াই করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের এডভোকেট আব্দুর রশীদ ও এডভোকেট মিজানুর রহমান। এ সময় স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাংবাদিক প্রবীরের পাশে দাঁড়ান এডভোকেট আমিরুল হক, এডভোকেট মলয় সাহা, এডভোকেট সাইফুল আলম প্রমুখ।

গত বছরের ১৬ আগস্ট বিকেলে ঢাকার ডিবি পুলিশ ইন্দিরা রোডের দৈনিক বাংলা ৭১ কার্যালয় থেকে প্রবীর সিকদারকে তার নিজের নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনার কথা বলে নিয়ে যায় ডিবি কার্যালয়ে। পরে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানায় সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মানহানির অভিযোগ এনে ৫৭ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন সরকারি উকিল স্বপন পাল। ওই মামলায় ওইদিন রাতেই প্রবীরকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার দেখিয়ে ফরিদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। ফরিদপুরে কোতোয়ালি থানায় ১৭ আগস্ট দিনভর চোখ বেঁধে এবং হাতকড়া পরিয়ে তাকে পুলিশি নির্যাতন করা হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে ফরিদপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

১৮ আগস্ট ফরিদপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার জামিনের আবেদন বাতিল করেন এবং পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দেশে ও বিদেশে তীব্র প্রতিবাদের মুখে রিমান্ডে না নিয়েই ১৯ আগস্ট প্রবীর সিকদারকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।

সেই সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে ফরিদপুরের আইনজীবীদের প্রবীরের পক্ষে দাঁড়াতে বাধা দেওয়া হয়। একজন মাত্র আইনজীবী, এডভোকেট আলী আশরাফ নান্নু সাহসের সাথে তার পাশে দাঁড়ান। পরে ফরিদপুরে আদালত প্রবীরকে হাজিরা অব্যাহতি দেন।

সেই মামলায় ফরিদপুর পুলিশ গত এপ্রিলে সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করলে মামলাটি ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। বুধবার ছিল সেই আদালতে প্রবীরের হাজিরার দিন। তার পক্ষের আইনজীবীরা জামিন অব্যাহত রাখার আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারক স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করে আগামী ২৯ জুন মামলার চার্জ গঠনের দিন ধার্য করেন।

জামিন পেয়ে প্রবীর সিকদার তার প্রতিক্রিয়ায় বাকস্বাধীনতা হরণকারী ৫৭ ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, এ মামলায় জামিন পাওয়ার বিষয়টি এক ধরণের বিজয়; এ বিজয় ৫৭ ধারার বিরুদ্ধে সোচ্চার সকল মানুষের।

(পিএস/এএস/মে ২৫, ২০১৬)