বাগেরহাট প্রতিনিধি : মানবদেহের জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকর ফরমালিন যুক্ত মৌসুমি ফলে ছেয়ে গেছে বাগেরহাটের ফলের বাজার। মৌসুমের শুরুতে বেশি দামের আশায় এসব ফরমালিন যুক্ত ফল দোকানে উঠিয়ে অবাদে বিক্রি করে চলেছে ব্যবসায়ীরা। মানবদেহের জন্য খাদ্যে ৩ ভাগ ফরমালিন সহনীয় হলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মৌসুমি ফলে মাত্রঅতিরিক্ত ফরমালিন ব্যবহার করায় মারত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে জেলার সাধারণ মানুষ।

এ ফলে মৌসুমের শুরুতে ফরমালিন আতংকে সাধারন ক্রেতারা ফল কিনতে আগ্রহ হারাচ্ছে। ফলমালিন আতংকের এ চিত্র শুধু বাগেরহাট সদর উপজেলাতেই নয় জেলার অন্যান্য উপজেলা গুলোতেও ফলের দোকানে ফরমালিন যুক্ত ফল অবাদে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে জেলার হাট-বাজার গুলোতে অবাদে ফরমালিন যুক্ত আম, লিচু, কাঠাল বিক্রি চললেও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত বাজার মনিটরিং বা ভ্রম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। জেলার হাট-বাজারের ফলের দোকান ঘুরে দেখা গেছে এসব চিত্র।

এদিকে মৌসুমি ফলে ফরমালিন থাকতে পারে এমন কথা স্বীকার করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ফল ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা পাইকারি ফল ব্যসায়ীরা কখনো ফলে ফরমালিন মেশায় না। মূলত ফরমালিন মেশানোর কাজটা আড়ৎ থেকে করা হয়। আমরাতো শুধু বিক্রি করি।

বাগেরহাট বাজার থেকে পরিবারের জন্য লিচু ও আম কিনতে আসা আরিফুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা জানান, আমরা সাধারণ ক্রেতারা ফলে ফরমালিন আছে কি না তা জানিনা। ফলে ফরমালিন আছে কি না তা দেখবে প্রশাসন। পরিবারের জন্য তাই ফল কিনতে হলে তাই দেখে শুনে কেনার চেষ্টা করি।

বাগেরহাট সিভিল সার্জন অফিসের এমওসিএস ডাঃ প্রদীপ কুমার বকসি জানান, ফলমালিন মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিক্ষর। এর প্রভাবে শ্বাসতন্ত্র, হার্টের সমস্যা, কিডনি, খাদ্য হজম প্রক্রিয়ায়, ব্লাড ক্যান্সার, বোনমেরুর কার্য ক্ষমতা কমানো ও রক্ত শূন্যতাসহ মানব শরীরে নানা ধরনের রোগ দেখা দেয়। এছাড়া ফলমালিন এর প্রভাবে গর্ভবতি মায়েদের সময়ের আগে গর্ভপাতসহ সদ্য ভুমিষ্ট শিশুরা বিভিন্ন ধরনের রোগ আক্রান্ত হতে পারে।

তিনি আরো জানান, সরাসরি মাসান্য পরিমান ফরমালিন কেউ যদি খেয়ে ফেলে সাথে সাথে তার মৃত্যু হতে পারে।

বাগেরহাট ক্যাব এর সভাপতি বাবুল সরদার জানান, মৌসুমি ফলে ফরমালিন নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যে ভ্রম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তবে আইনের যথাযথো প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি একান্ত প্রয়োজন। আর জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা না গেলে ফলে ফলমালিন বিষয়টি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম জানান, ফলে ফরমালিন বিষয়টি নিয়ে মূলত ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করে থাকে। আর এ অভিযানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগীতা করা হয়।

(একে/এএস/মে ২৮, ২০১৬)