সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :  জাতীয় বীরের খেতাব পাওয়া আইপিএল কাঁপানো বিশ্বসেরা ক্রিকেটার মুস্তাফিজ এখন ১৬ কোটি মানুষের সন্তান। আগামি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নশীপ বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনবেন তিনি এমন প্রত্যাশায় তার গ্রামের মানুষ উদ্বেলিত। তারা মুস্তাফিজকে নিয়ে এখন আত্মহারা । আগামিতে তিনি আরও ভালো খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবেন এমন প্রত্যাশা তাদের।

সরেজমিনে বুধবার সকালে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার অজ পাড়াগাঁ তেঁতুলিয়ায় গেলে হ্রামবাসি জানায়, এই ছেলে একদিন যে এতোবড় মাপের ক্রিকেটার হয়ে উঠবেন তা কে জানতো। স্কুলে লেখাপড়ায় যার মন ছিল না। কেবলই ক্রিকেট খেলে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন সেই ছোটবেলা থেকে এখন তিনিই বিশে্বর সেরা বোলার । সেরা ক্রিকেটারই নন শুধু তিনি বাংলাভাষা শিখিয়েছেন বিদেশীদের । তিনি এ যুগের ভাষা সৈনিক বলে জানালেন তার গ্রামবাসী।

ক্রিকটার মুস্তাফিজুর রহমান জানান,নিজের দেশে নিজের মানুষের কাছে ফিরে এসে অনেক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। মায়ের কাছে ফিরে সে আনন্দিত । শিশুসুলভ চপলতা ও অত্যন্ত সরল সহজ তরুন বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজ এখন বাড়িতে কয়েকদিনের ছুটি কাটাচ্ছেন। তিনি মিডিয়ার সাথে কোনো বলা বারন রয়েছে বলে জানালেন। আধো আধো ভাষায় কথা বললেন তিনি । বললেন কবুতর পালন তার অন্যতম হবি। ভারতে প্রায় দুই মাস ধরে আইপিএলে খেলে বাড়ি ফিরেছেন মুস্তাফিজ।স্বজনদের মাঝে আসতে পেরে তিনি আনন্দিত।

মুস্তাফিজের বাবা আবুল কাশেম জানান,তার ছেলে এখন দেশের মানুষের সন্তান। প্রধানমন্ত্রী তাকে জাতীয় বীর ঘোষনা করায় তারা গর্বিত। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার তারালি ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামের সবুজবেষ্টিত বাড়িতে দুই মাস পর ফিরেছে সে। এর থেকে ভাল লাগা আর কি হতে পারে। মা যা রান্না করেন তাই ভালো লাগে। তবে ওর পছন্দ দেশি মুরগি আর খিচুরি। এখন আমের মৌসুম, মুস্তাাফিজের আম খুব পছন্দের খাবার।

বরেয়া মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হীরালাল সরকার জানান,এই স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে ২০১১ সালে। তারা প্রত্যাশা করেন মুস্তাফিজ আরও ভালো খেলা করে বিশ^কাপ নিয়ে আসবে বাংলাদেশে। গ্রামের মানুষ স্কুল মাঠে বড় পর্দা টানিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে নিয়মিত মুস্তাফিজের খেলা দেখেছেন। তারা তাদের সন্তানের খেলায় মুগ্ধ হয়ে করতালি দিয়ে তৃপ্তি বোধ করেছেন।

তারালি ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ছোট জানান. তার ইউনিয়নের ছেলে মুস্তাফিজ জাতির গর্ব। তার মতো মুস্তাফিজ ঘরে ঘরে আরও গড়ে উঠুক। তিনি বিশে^ বাংলাভাষার মর্যাদাও বাড়িয়ে দিয়েছেন। তার সাথে কথা বলতে দেখা করতে দলে দলে লোক আসছেন মুস্তাাফিজের বাড়িতে। তিনি কথা বলছেন , মিডিয়ার সামনে নয়। পায়ের চোট এখনও কিছুটা আছে বলে জানালেন তিনি। গ্রামের মানুষ উন্মুখ হয়ে আছেন তাকে সংবর্ধনা দিতে । কিন্তু মুস্তাফিজ না করেছেন। আর গ্রামের ছেলেরা বলছেন আমরাও এক একজন মুস্তাফিজ হয়ে উঠতে চাই। একইসাথে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এলাকার রাস্তাঘাট, শিক্ষা, বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়াও সকল উন্নয়ন চান তিনি।