বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোল্লাহাটে সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলা,বসতঘর ভাংচুর ও লুটপাট অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার রাতেও আস্তাইল গ্রামের সালেক খান, এনামুল খান, হাসু খান, আকরাম ও ইনজিলের বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে কমপক্ষে কুড়িটি বসতঘর ও দোকান পাট ভাংচুর চালিয়েছে পার্শ্ববর্তী সিংগাতি গ্রামের চৌধুরী বংশের লোকজন।

এ ঘটনায় প্রভাবশালী চৌধুরী পক্ষ থেকে অর্ধশত গ্রামবাসি নামে থানায় মামলা দায়ের করা হলে আস্তাইল গ্রামে পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের নারী ও শিশুরা আতঙ্কে রয়েছে। ওই প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কেউ কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানাগেছে, গত ২২ মার্চ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার সিংগাতি গ্রামের ইউপি সদস্য প্রার্থী জানিক চৌধুরীকে ভোট না দেয়ায় মজনু মোল্লাকে মারপিট করলে সে গুরুতর আহত হয়।

এ খবর পাশের গ্রাম আস্তাইল এলাকার আহত মজনু মোল্লার মামার খান বাড়ি ছড়িয়ে পড়লে খান ও চৌধুরী বংশের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পহেলা জুন বেলা ১১ টার দিকে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় কমপক্ষে অর্ধশত আহত। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হলেও বসতঘর ভাংচুর চালিয়ে যাচ্ছে চৌধুরী বংশের লোকজন। তারা মঙ্গলবার রাতেও আস্তাইল গ্রামের সালেক খান, এনামুল খান, হাসু খান, আকরাম ও ইনজিলের বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে।

আস্তাইল গ্রামের দিমজুর সালেক খানের স্ত্রী হাসিনা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, রাতে ২৫-৩০ জনের একদল লোক এসে প্রথমে বসত ঘরের উপর ইট মারে। পরে ঘরের বেড়া ও দরজা ভাংচুর চালায়। এমনকি ভাত খাবার একটা থালাও রেখে যায়নি। আমরা কি অপরাধ করেছি। আমার স্বামী ঢাকায় দিনমজুরের কাজ করে।

প্রতিবেশি দোকানদার সিদ্দিক বলেন, চায়ের দোকান দিয়ে কোন মতে সংসার চালাতাম। মারামারিকে কেন্দ্র করে দোকান ঘর ও বসতঘর ভাংচুর চালিয়ে নিঃস্ব করে দিয়েছে। এমনকি উল্টো মামলা দিয়ে প্রায় ৪০ টি পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করেছে।

এ ব্যাপারে জানিক চৌধুরীর সাথে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, হামলায় জানিক চৌধুরীর ২০-২৫ লোক আহত হয়।

মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসম খায়রুল আনাম বলেন, মোল্লাহাট উপজেলার আস্তাইলের খান ও পাশের সিংগাতি গ্রামের চৌধুরী পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। আসামীরা পলাতক রয়েছে।

(একে/এএস/জুন ০৮, ২০১৬)