গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ব্যতিক্রমি এক অনুষ্ঠান “হাঁস সমাবেশ”। এ হাঁস সমাবেশে কয়েক হাজার হাঁস জড়ো করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে সদর উপজেলার পিঠাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই হাঁস সমাবেশের আয়োজন করে বিআরডিবি। কাজুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় এ হাঁস সমাবেশে জেলা প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগনসহ এলাকার অসংখ্য উৎসাহী লোক জড়ো হয়। ব্যতিক্রমি এ সমাবেশ দেখে অনেকেই হাঁস চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাজুলিয়া ইউনিয়নের বিল এলাকায় প্রতি বছরই অনাবাদি থেকে যায় অনেক জমি।বছরের পর বছর ধরে এসব এলাকার জমি অনাবাদি থাকায় এলাকার দরিদ্র কৃষকেরা দিন দিন আরো দরিদ্র হচ্ছে।নিজেদের বেঁচে থাকার তাগিদে তারা বিকল্প কাজের সন্ধান খুঁজে নিয়েছে।করছে হাঁস চাষ। এ এলাকার এমন কোন বাড়ি খুঁজে পাওয়া যাবেনা যারা হাঁস-মুরগী লালন পালন করছেনা। কাজুলিয়া ইউনিয়নের ৫‘শতাধিক পরিবার পারিবারিক বা ব্যবসায়িক ভিত্তিতে হাঁস চাষ করে থাকেন।গ্রামের দরিদ্র লোকদেরকে “একটি বাড়ি একটি খামার” প্রকল্পের আওতায় করা হয়েছে ঋনের ব্যবস্থা।

পিঠাবাড়ি গ্রামের বিজলী বালা, উজ্জল কুমার বালা, নাজমা বেগম, স্মৃতি বিশ্বাস ও সীমা বিশ্বাস পরিবর্তন ডট কমকে জানান, জমিতে ফসল না হলেও এ এলাকার লোকজন হাঁস চাষ করে ভালই আছেন। কষ্টের মধ্যেও তারা ছেলে-মেয়েদের লেখা পড়াসহ জীবন চালিয়ে নিচ্ছেন, অনেকেই এখন স্বাবলম্বী। তবে অনেকেই ‍ঋনের পরিমান বাড়ানোসহ ‍ঋনের সুদ মওকুফের আবেদন জানিয়েছেন।

হাঁস পালনের মধ্য দিয়ে দেশের ডিম ও আমিষের চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মনে করছেন জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আতাউর রহমান চৌধুরী ।হাঁস খামারীদের উৎসাহিত করতেই মূলতঃ এই হাঁস সমাবেশের মতো একটি ব্যতিক্রম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ বিআরডিবি-র উপ-পরিচালক জয়প্রকাশ জানান, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় তারা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৯ টি ওয়ার্ডে ৯টি গ্রাম উন্নয়ন সমিতি গড়ে তোলা হয়েছে। প্রত্যেক সমিতিতে ৬০ জন করে সদস্য ২শ’ টাকা করে সঞ্চয় করে থাকে।তিনি জানান, এ ইউনিয়নের ৯টি সমিতিতে ব্যক্তি সঞ্চয়, উৎসাহ বোনাস এবং ঘূর্নায়মান ঋন তহবিল মিলে তাদের জমানো ৫৪ লাখ টাকা উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সদস্যারা তাদের চাহিদা মত ঋন নিয়ে থাকে।অনাবাদী ভূমির অভিশাপ কাটিয়ে কাজুলিয়া ইউনিয়নের লোকজন হাঁস চাষ করে আজ স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে বলে জানান তিনি।

এ হাঁস সমাবেশের মাধ্যমে হাঁস চাষীরা আরো উৎসাহিত হবে বলে মনে করেন জেলা প্রশাসক মো: খলিলুর রহমান। তিনি ভালো হাঁস চাষীদেরকে আরো বেশী করে সহায়তা দেবার কথা বলেন।

সরকারী সাহায্য সহযোগীতা অব্যাহত থাকলে শুধু বর্তমান খামারীরাই নয়- হাঁস পালন করে এলাকার অন্যরাও নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

(পিএম/এএস/জুন ১৪, ২০১৬)