গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)প্রতিনিধি :ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা সদরের নতুন বাসস্টেন্ড রেলক্রসিং থেকে লংকাখোলা পর্যন্ত সড়ক পুণঃনির্মাণ ও সংস্কারে ধীরগতি, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যবহৃত হচ্ছে নিম্নমানের ইটের খোয়া, পাথর, বিটুমিন। রাস্তার দু’পাশে মাটি ভরাট ছাড়াই বর্ধিত করা হয়েছে সড়ক। অতিরিক্ত তাপমাত্রা ভিটুমিনের ব্যবহার, প্রায় ৭কিলোমিটার দূরে চুলা বসিয়ে ভ্যানযোগে ঠান্ডা ভিটুমিন-পাথরের মিশ্রণ দিয়ে কার্পেটিং করে যে কোনভাবে কাজ  শেষ করে জুন ক্লোজিংয়ে বিল উত্তোলনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ মরিয়া হয়ে উঠেছে।

গৌরীপুর-বেখৈরহাটি সড়কটি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া, সদর উপজেলা একাংশ ও মদনপুর বাজারসহ অত্র উপজেলার অচিন্তপুর, মাওহা ও সহনাটী ইউনিয়নের প্রায় ১০লাখ মানুষের চলাচলের জন্য অতীব জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক। দীর্ঘদিন যাবত রাস্তাটি ভাংগা ও যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী ছিলো। সংস্কার ও মেরামতের দাবিতে গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদসহ একাধিক সংগঠন রাস্তা অবরোধ, মানব বন্ধন, সভা-সমাবেশ করে।

বহু আন্দোলন-সংগ্রামের পর অবশেষে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর আরটিআইপি-২ প্রকল্পের অধীনে ১৪.০৮৮ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার ও মেরামতের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। এলজিইডি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স শাহিল এন্টারপ্রাইজের সাথে ৪কোটি ২৭লক্ষ ৬৪হাজার ৬১৬টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়। ১৫জুলাই/১৫ তারিখে কাজের উদ্বোধন করেন সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির এমপি ও পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। রাস্তাটি প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সামাদের নামে নামকরণও করেন। কাজটির নির্ধারিত সময় ছিলো ১৩এপ্রিল। দীর্ঘ ১১মাস কোন কাজ না করে জুন মাসে বর্ষা মৌসুমে তড়িঘড়ি কওে কাজ শেষ করে জুন মাসে বিল উত্তোলনরে জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। অথচ এখন পর্যন্ত ৫০শতাংশ কাজই সম্পন্ন হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গৌরীপুর পৌর শহরের টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সামনে থেকে বালুয়াপাড়া রাস্তায় প্রায় ৬মাস পূর্বে কিছু ইটের পচা খোয়া দিয়ে গর্ত ভরাট করে। এসব খোয়া বৃষ্টির পানিতেই ধুয়ে আবারও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। জেলখানা মোড় থেকে গোলকপুর পর্যন্ত রাস্তায় ব্যবহার করা হয়েছে খুবই নি¤œমানের ইটের খোয়া। রাস্তার দু’পাশে ৩ফুট করে বৃদ্ধি করা হলেও মাটি ভরাট করা হয়নি। ফলে কয়েকটি স্থানে ইতিমধ্যেই ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গোলকপুর এলাকায় পুকুরের পাশে গাইডওয়াল ছাড়াই রাস্তার নির্মাণ করা হয়েছে। রয়েছে যেকোন মুর্হুতে ভেঙ্গে পড়ার আশংকা। রসুলপুর এলাকায় রাস্তা গর্ত ভরাটে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইটের সুরকী।

প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে মাওহা ইউনিয়নের বীরআহাম্মদপুর চুলা নির্মাণ করে বিটুমিন ও পাথর মিশ্রণ করে শাহগঞ্জ, গাগলা ও অচিন্তপুর এলাকায় রাস্তায় কার্পেটিং এর কাজ চলছে। এলাকাবাসীর ধারণা নিম্নমানের বিটুমিন ও পাথর তাদের চোখের আড়াল করতে এতো দূর চুলা নির্মাণ করে বিটুমিন পাথর মিশ্রণ করে ভ্যানযোগে এনে চলছে সংস্কার ও মেরামত কাজ। এ ঘটনায় খোদ প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তাগনও অবাক। অভিযোগ রয়েছে, কাজ ভালো-মন্দ যাই হোক অফিসিয়াল পার্সেন্টিজ দিয়েই বিল নিতে হয়। উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন, চুলা দূরে হলেও সমস্যা নেই। চুলা এখন রাস্তার সন্নিকটেই করা হয়েছে। ঠিকাদারদের অফিসে কোন খরচ দিতে হয় না।



(এসআইএম/এস/জুন২১,২০১৬)