সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : এক সময় দক্ষ কাঠ মিস্ত্রি ছিলেন সাতক্ষীরা শহরের গড়েরকান্দার হেকিম সরদারের ছেলে বায়তুল্লাহ সরদার। ঠিকমত সহযোগি যোগাড় না করতে পেরে বাধ্য হন ওই পেশা ছেড়ে দিতে। একপর্যায়ে দেড় বছর আগে ব্রাক থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ভ্যানে ব্যাটারি লাগিয়ে রোজগার শুরু করেন তিনি।

প্রথম ঋণ পরিশোধ করার পর আবারও ব্রাক থেকে ১৫ হাজার টাকা ঋণ নেন বায়তুল্লাহ সরদার(৬৫)। ভ্যান চালিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি ব্রাকের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হতো তাকে। এমই এক সময়ে গত পহেলা জুন থেকে প্রশাসন ব্যাটারি চালিত ভ্যান চালানো বন্ধ করে দেয়। বয়সের ভারে পা ভ্যান চালানো সম্ভব নয় বলে বাড়িতে বসেই সময় কাটাতেন বায়তুল্লাহ। কিন্তু ব্রাকের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পারায় কর্তৃপক্ষ ও ছোট ছেলের গালমন্দ শুনতে হয় তাকে। নিরুপায় গয়ে গত বুধবার সকালে ব্যাটারি খুলে পায়ে চালিত ভ্যান নিয়ে রোজগারের জন্য বাড়ি থেকে শহরের উদ্দেশ্যে বের হন বায়তুল্লাহ। দুপুর একটার দিকে হাটের মোড়ে চলমান ভ্যানের সিটের উপরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

শুক্রবার সকালে নিজের স্বামীর মৃত্যুর করুণ পরিণতি জানাতে যেয়ে নিজ বাড়ি বসে এভাবেই ঘটনা তুলে ধরেন রওশানারা বেগম। রওশানারা বেগম জানান, চার ছেলে ও দু’ মেয়ের মা তিনি। দু’ছেলে জুলু ও ছোটনপেটের তাগিদে ভারতে গেছে। বড় ছেলে লতিফুল ইসলাম লেদ মিস্ত্রী। ছোট ছেলে শরিফুল ইসলাম কাঠ মিস্ত্রী। স্বামীকে নিয়ে ছোট ছেলের সংসারেই থাকতেন তারা। স্বামীর লাশ বৃহষ্পতিবার বাদ জোহর নামাজে জানাজা শেষে স্বামীর লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

রওশানারার আকুতি, আর কোন ব্যাটারি চালিত বৃদ্ধ ভ্যান চালককে যেন এ ভাবেই মৃত্যুর মুখে পড়তে না হয়।

(আরকে/পি/জুন ২৪, ২০১৬)