নওগাঁ প্রতিনিধি : অবসরে যাওয়ার দুই মাসেও গ্র্যাচুয়িটির টাকা দেয়া হচ্ছে না নওগাঁর মান্দা উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিমিটেডের (ইউসিসিএ) কর্মচারী পরিতোষ কুমার দাসকে। উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফার দাবিকৃত দুই লাখ টাকা না দেয়ায় তিনি এই হয়রানীর শিকার হচ্ছেন বলে তার অভিযোগ।

জানা গেছে, পরিতোষ কুমার দাস ১৯৭৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মান্দা ইউসিসিএ লিমিটেডের পিয়ন পদে যোগদান করেন। চলতি বছরের ১ মে তিনি অবসরে যান। হিসেব অনুয়ায়ী এ অফিসে তিনি চাকরি করেন ৪১ বছর ২ মাস ৯দিন। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিমিটেডের কর্মচারীদের চাকরি বিধিমালা ২০১৬ মোতাবেক পরিতোষ দাসের গ্র্যাচুয়িটির পাওনা দাঁড়ায় ৮২ মাসের মুল বেতনের সমপরিমান টাকা। বিধিমালার সপ্তম অধ্যায়ের ৩৪ অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে, ইউসিসিএতে কমপক্ষে ১০ বছর চাকরি করেছেন এমন ব্যক্তি প্রত্যেক বছরের জন্য ২ মাস হিসেবে সর্বশেষপ্রাপ্ত মুল বেতনের সমপরিমান টাকা গ্র্যাচুয়িটি পাবেন।

ভূক্তভোগী পরিতোষ দাস জানান, সর্বশেষ চাকরি বিধিমালায় সমিতির নিকট পাওনা ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা এ টাকা দিতে তার নিকট ২ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। কর্মকর্তার দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে ৪১ মাসের বেতন দেয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে তার অভিযোগ। তিনি আরো জানান, ইউসিসিএর চাকরিই ছিলো তার উপার্জনের একমাত্র পথ। অবসরে যাওয়ায় দুই মাস ধরে তিনি বেতন পাননি। গ্র্যাচুয়িটির টাকাই এখন তার একমাত্র সম্বল। এ টাকার প্রাপ্তির জন্য গত ১৫ জুন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করা হয়েছে। এরপরও তার পাওনা পরিশোধের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় পরিবার নিয়ে তিনি মানবেতন জীবন-যাপন করছেন।

মান্দা ইউসিসিএর সভাপতি খলিল উদ্দিন শেখ জানান, চাকরি বিধিমালা মানি না। পরিতোষকে ৪১ মাসের গ্র্যাচুয়িটি দেয়া হবে এটিই আমাদের সিদ্ধান্ত। ঘুষ দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, বিধি-বহির্ভুতভাবে কর্মচারী পরিতোষ দাস গ্র্যাচুয়িটি প্রাপ্তির আবেদন করেন নি। এ আবেদনে তাকে গ্র্যাচুয়িটি দেয়া সম্ভব নয়। তবে, সংশোধনী আবেদন করলে সমিতির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে ৪১ মাসের গ্র্যাচুয়িটি দেয়া হবে।

ইউসিসিএ লিঃ মান্দা কমিটির সদস্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম প্রামানিক বলেন, সর্বশেষ চাকরি বিধিমালা মোতাবেক পরিতোষ কুমারকে পুরো ৮২ মাসেরই গ্র্যাচুয়িটি প্রদান করতে হবে। বিধিমালার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

(বিএম/এস/জুন২৮,২০১৬)