চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, রাজনীতিবিদ ও লেখক মিয়া আবু মুহাম্মদ ফারুকী আর নেই। শুক্রবার ১ জুলাই সকাল ৯টা ২০ মিনিটে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না...রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী শোয়েব ফারুকী ও পাহাড়তলীর আন্তর্জাতিক চক্ষু হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা শহীদ ফারুকীর বাবা।

শোয়েব ফারুকী জানিয়েছেন, মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা বাদ জুমা জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ গ্রামের বাড়ি পটিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে বাদে আসর দ্বিতীয় জানাজা শেষে দাফন করা হবে।

মিয়া ফারুকী ১৯৩৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পটিয়া উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের ফারুকীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাজীবন শেষে করে ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগে যোগ দেন তিনি। তখন থেকে তিনি বিভিন্ন পর্যায়ে ইউনিয়ন, থানা ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে মাঠে-ময়দানে সংগ্রাম চালিয়ে যান। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ও জোরালো ভূমিকা পালন করেন। রাজনীতির স্বার্থে তিনি ১৯৫৮ সালে কারাবরণ করেন। এরপরও বিভিন্ন সময়ে তাকে ৬-৭ বার কারাবরণ করতে হয়। এসময় তিনি জননেতা মাওলানা ভাসানী, শহীদ সোহওরার্দী ও বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সমাবেশসহ জনসেবার সুযোগ লাভ করেন।

১৯৬০ সালে চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন মিয়া ফারুকী। ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলন, ৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আস্থা অর্জন করেন। ১৯৭১ সালে পাকবাহিনী তার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। তাকে ধরতে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হবে বলে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এসময় তিনি ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন এবং সেখান থেকে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেন।

তিনি চট্টগ্রাম রাইফেল ক্লাবে ১৯৬৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিয়ের সাক্ষী ছিলেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তিনি নিজেকে রাজনীতি থেকে গুটিয়ে নেন এবং লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন। তার শত শত লেখা স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে।

(ওএস/এএস/জুলাই ০১, ২০১৬)