সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি জামায়াত শিবির ও তাদের দোসররা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য পরিকল্পিতভাবে দেশের সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চালাচ্ছে। বেছে বেছে তারা মন্দিরের পুরোহিত, সেবাইত ও মিশনারিজদের টার্গেট করে হত্যা করছে। একটি হত্যার ঘটনার সঙ্গে অন্যটির যথেষ্ট মিল থাকায় এসব যে পরিকল্পিত তা প্রমাণিত। শুধুমাত্র পুলিশ নয়, জনগণকে সাথে নিয়ে এর প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।সোমবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে আশাশুনি- সাতক্ষীরা সড়কে  এক মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে বক্তারা এসব কথা বলেন।

তারা আরো বলেন, জামায়াত বিএনপি’র একটি অংশ কৌশলে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনে ঢুকে পড়ে সংখ্যালঘু ও বিদেশীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। তারা দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট করার জন্য চেষ্টা অব্যহত রেখেছে। এদেরকে চিহ্নিত করে অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে দলের ও সরকারের পরিণতি হবে ভয়াবহ। আবারো এ দেশ জঙ্গীবাদিদের প্রমাণ করানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের সে অপচেষ্টা ব্যর্থ করা হবে। তারা পুরোহিত ভবসিন্ধু বর এর জীবন রক্ষায় তাৎক্ষণিক হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা ও সকল চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকারিভাবে বহন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। একইসাথে ওই পুরোহিত যাতে পঙ্গুত্ব নিয়ে সারাজীবন খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারে তার জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ থ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখা আয়োজিত মামনববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন সাংসদ মোস্তাক আহম্মেদ রবি, সংগঠনের সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধু, ইস্কনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারি. তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার, অধ্যাপক আবু আহম্মেদ, সাংবাদিক অসীম বরণ চক্রবর্তী, মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, অপরেশ পাল, নয়ন সানা, সুবোধ চক্রবর্তী, চন্দ্রকান্ত মল্লিক, সিদ্ধেশ্বর চ্যাটার্জী, প্রাণবল্লভ দাস, বিকাশ দাস,ব্রহ্মরাজপুর রাধা গোবিন্দ মন্দির কমিটির উপদেষ্টা কানাই লাল সাহা, ভৈরব সরকার, আন্নদ সানা, পল সাহা,, নারায়ন মণ্ডল, প্রমুখ।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাতকঈরা সদর শাখার সাধারণ সম্পাদক নিত্যানন্দ আমিন।

এদিকে ব্রহ্মরাজপুর রাধা গোবিন্দ মন্দিরের পুরোহিত ভবসিন্ধু বরকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ওই মন্দির কমিটির সভাপতি রামপদ সাধুখাঁ’র দায়েরকৃত মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশে সাস্থান্তর করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক এনামুল হক রোববার রাতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দু’জনকে নিজ নিজ এলঅকা থেকে গ্রেফতার করেছেন।

গ্রেফতাররা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর গ্রামের রাজাউল্লাহ’র ছেলে জাহিদুর রহমান ও ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের ওয়ারিয়া গ্রামের মাওঃ আব্দুল বারীর ছেলে নুরুল বাশার ।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক এনামুল হক জানান, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবদের জন্য সাত দিনের রিমাণ্ড আবেদন জানিয়ে সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজাতে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২ জুলাই শনিবার ভোর সাড়ে তিনটায় সাত/ আট জন দুর্বৃত্ত দু’ চৌকিদারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পিঠ মোড়া দিয়ে বেঁধে রেখে দরজা খুলতে বাধ্য করে ব্রহ্মরাজপুর রাধা গোবিন্দ মন্দিরের পুরোহিত ভবসিন্ধু বরকে। পরে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। তিনি বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকার মহাখালি বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

(আরএনকে/এস/জুলাই০৪,২০১৬)