আন্তর্জাতিক ডেস্ক :সীমান্তে কেন কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার চিঠি পাঠিয়েছে দিল্লির কাছে। এই বেড়া অবশ্য বাংলাদেশের সীমান্তের বেড়া নয়।

নেপাল-ভারত সীমান্তে ১৭ কিলোমিটার লম্বা এই কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে যাতে ভারত থেকে হাতির দল নেপালে না ঢুকতে পারে। এই বেড়াটি বিশ্বব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় তৈরী করা হয়েছে। বেড়াটি সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে হাতিরা বেড়ার গোড়া আঘাত করে সেটা ভেঙ্গে না ফেলতে পারে। বিদ্যুৎ সংযোগও রয়েছে বেড়ায়, যাতে কোনও হাতি বেড়া ছুঁলেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।

আসাম থেকে হিমালয়ের কোল ধরে তিস্তা পেরিয়ে নেপাল অবধি হাতিদের চলাচল করার এই রাস্তাটি চিরাচরিত। কিন্তু এই বেড়ার ফলে চিরাচরিত রাস্তাটি বন্ধ হয়ে গিয়ে এখন হাতির দল উত্তরবঙ্গের লোকালয়ে হামলা চালাচ্ছে, ফসল বাড়িঘর নষ্ট করছে, অনেক সময়ে মানুষও মারছে। সে কারণেই এই বেড়া নিয়ে আপত্তি করছে পশ্চিমবঙ্গ।

রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, এই বেড়া দিয়ে দেওয়ার ফলে হাতিরা এখন নেপালে যেতে পারছে না। তারা ক্ষিপ্ত হয়ে গিয়ে আমাদের রাজ্যে হামলা চালাচ্ছে। আমার দপ্তর থেকে কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে যাতে তারা বিষয়টি নিয়ে নেপালের সঙ্গে আলোচনা করে। ভারত থেকে হাতি ঢোকা নিয়ে নেপালের ঐ সীমান্তে ক্ষোভ রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের একাংশ মনে করেন যে হাতির হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে যেহেতু ভারতে ক্ষতিপূরণ দিতে হয়, তাই ভারত-ই হাতিদের নেপালের দিকে ঠেলে দেয়।

এই অভিযোগের জন্য আগে ভারতই একটা বেড়া তৈরী করে দিয়েছিল ওই অঞ্চলে। কাজ না হওয়ায় নতুন করে উন্নতমানের বেড়া তৈরী হয়েছে সম্প্রতি। তবে এই বেড়াটি দেওয়া হলেও তার মাঝখানে একটা করিডর রাখা উচিত ছিল বলে মনে করেন উত্তরবঙ্গে হস্তী বিশারদ রাজ বসু। তাঁর কথায়, উচিত ছিল প্রায় এক কিলোমিটারের একটা করিডর রাখা, যেখানে হাতিদের খাওয়ার জন্য যথেষ্ট ফসলও থাকবে। নেপালের ওই এলাকার যেসব কৃষক আছেন, তাঁদের ফসল আর জমির জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন




(ওএস/এস/জুলাই১৩,২০১৬)