মুন্সীগঞ্জে প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পদ্মার ভাগ্যকুল পয়েন্টে ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি বেড়েছে ১১ সেন্টিমিটার। নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়েছে শতাধিক মানুষ।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আউয়াল জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মুন্সীগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

কয়েকদিন ধরেই ভাগ্যকুল পয়েন্টে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ৩২ সেন্টিমিটার, শুক্রবার ৩৯ সেন্টিমিটার এবং শনিবার ৫০ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে।

জেলার মেঘনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতি নদীর পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত রয়েছে। আরো কিছুদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। তবে বন্যা পরিস্থিতি এখনো আশঙ্কাজনক নয় বলে জানায় সূত্রটি।

লৌহজং উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ খালেককুজ্জামান জানান, পরিস্থিতি এখনো আশঙ্কাজনক নয়। নদী তীরবর্তী গ্রামে ঘরে পানি ঢুকে গেছে।

বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ ধারণ করলে ওষুধ, ত্রাণ সামগ্রী, খাবার পানি সরবরাহ করার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আমরা জনপ্রতিনিধিদেরকে যাবতীয় নির্দেশ দিয়েছি।

মুন্সীগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসন সাইফুল হাসান বাদল জানান, জেলা প্রশাসন থেকে বন্যা কবলিত মানুষের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কিছুর ঘাটতি হবে না।

এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নদী তীরবর্তী মানুষের জীবনযাত্রা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে জমির ফসল, পানির নিচে চলে গেছে রাস্তাঘাট। স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই অবসর সময় কাটাচ্ছে।

মাওয়ার কাছে জসলদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং জসলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়টির একটি ক্লাস রুম ছাড়া সব ক্লাস রুমে পানি ঢুকেছে। ঝুঁকি নিয়ে শুধু পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বাকি সকল শ্রেণিকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মুন্সীগঞ্জের নদী তীরবর্তী উপজেলা টঙ্গিবাড়ী, লৌহজং ও শ্রীনগরের ৪৫টি গ্রামের মানুষ অসহায় জীবনযাপন করছে।

প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে পানি। ফলে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম। নদীর পাড়ের মানুষদের একদিকে যেমন প্লাবিত হচ্ছে তাদের স্বপ্ন তেমনি অসহায় জীবনযাপনের প্রস্তুতিও নিয়ে নিচ্ছে। নদী তীরবর্তী মানুষের ভাঙা গড়ার মাধ্যমেই চলে তাদের জীবনযাপন।

শত বাধা কিংবা সকল প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েই তারা ছুটে চলে। বন্যার ভয়বহতার কাছে হার মানলেও হেরে যায় না তারা নিজেদের কাছে। তাই এসব অঞ্চলের মানুষের পথচলা কেউ থামিয়ে দিতে পারে না।

(ওএস/এএস/জুলাই ৩০, ২০১৬)