সাতক্ষীরা প্রতিনিধি  : মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিরুদ্ধে নির্ভয়ে সাক্ষী দিতে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কোঅর্ডিনেটর (আইজিপি) এম সানাউল হক।

শনিবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার সাক্ষী, ভিকটিম, জেলা ও থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, প্রজন্ম ৭১, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ও স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই আহবান জানান।

সানাউল হক বলেন, সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেবে রাষ্ট্র। এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। সকল ভয় ও বির্তকের উর্দ্ধে থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কার্য চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিজামী, মুজাহিদ, কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামানসহ শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষে রায় কার্যকর করা হয়েছে। অনেক হুমকি এসেছে, ভয় দেখানো হয়েছে, লোভ দেখানো হয়েছে।

যুদ্ধাপরাধীদের সাথে অনেকেরই আত্মীয়তা হয়েছে, কোন কিছুই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে পারেনি। পারবেও না।

সাতক্ষীরার চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে উল্লেখ করে তিনি সকলকে নিজ নিজ স্থান থেকে সাক্ষী দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসার আহবান জানান।

সভায় উপস্থিতজনরা সাতক্ষীরাবাসীর পক্ষে বলেন, সাতক্ষীরার চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে কেবলমাত্র মাওলানা খালেক মন্ডল ওরফে জল্লাদ খালেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু আব্দুল্লাহেল বাকী, রোকনুজ্জামান খানসহ অসংখ্য শীর্ষ রাজাকারকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। শুধু তাই নয়, যুদ্ধাপরাধী দেলোওয়ার হোসেন সাইদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর সাতক্ষীরায় স্বাধীনতাবিরোধীরা যে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছিল, সেসব মামলা গুলোরও বিচার শেষ হয়নি।

জামায়াত-শিবির সাতক্ষীরায় একে একে ১৬ জনকে হত্যা করেছে। কয়েকটি মামলায় এখনো চার্জশিট হয়নি।

মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রত্যেক মামলার চূড়ান্ত রায় হতে যে সময় লাগে তার মধ্যেই নতুন করে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, সাতক্ষীরায় এক খালেক মন্ডল ব্যতীত জামায়াতের আর কোন শীর্ষ নেতা এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। গ্রেপ্তার করা হয় দ্বিতীয়, তৃতীয় সারির কর্মীদের। প্রথম সারির জামায়াত নেতারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে এসব হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে।

সভায় অবিলম্বে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কার্য দ্রুত শেষ করার দাবি জানানো হয়।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে সাংসদ অ্যাড. মুস্তাফা লুৎফুল্লাহ, জেলা পরিষদ প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহমেদ, জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আবু বকর সিদ্দিক, দেবহাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবুল গনি, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাসানুল ইসলামসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা বক্তব্য রাখেন।





(আরএনকে/এস/আগস্ট ৭, ২০১৬)