সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের সালথায় পাটের পাশাপাশি প্রচুর পাটকাঠির উৎপাদন হয়েছে। আগের তুলনায় এবছরে এই উপজেলায় পাটের চেয়ে পাটকাঠির কদর বেড়েছে। পাট চাষীরা বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন পাটকাঠি। এদিকে সরকার নির্দ্ধারিত পাটের মুল্য না থাকায় ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পাট চাষীরা।

জানা যায়, চাষীদের পাট উৎপাদনে বিঘা প্রতি (৫০ শতক) জমিতে যে পরিমাণ খরচ হয় সে পরিমান পাটের দাম পাওয়া যায় না। তাই পাটের লোকসান পুষিয়ে উঠতে পাটকাঠির প্রতি অধিক যত্ন নিচ্ছে কৃষকরা। ইতিপূর্বে দেশীয় বাজারে পাটকাঠি প্রক্রিয়াকরণ তেমন কোন ফ্যাক্টরি ছিলো না। নামমাত্র মূল্যে পার্টেক্স কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের বোর্ড তৈরির জন্য পাটকাঠি ক্রয় করতেন। আর এই পাটকাঠির মন্ড ব্যবহার করে হার্ডবোর্ডের মতো মূল্যবান জিনিস তৈরি করতেন। বর্তমানে গ্রাম পর্যায় থেকে পাটকাঠি কেনার উদ্যোগ নিয়ে কিছু কিছু বিদেশী প্রক্রিয়াকরণের কাজ শুরু করেছেন। যার প্রেক্ষিতে পাটের মূল্য কম থাকলেও চাষীরা পাটকাঠির দিকে বেশি নজর দিচ্ছেন। অতি সম্প্রতি ৬শ’ শতক জমি নিয়ে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের মীরকান্দি গ্রামে পাটকাঠি প্রক্রিয়াকরণের একটি শিল্প কারখানা গড়ে উঠছে। এখানে চায়না থেকে আগত “বাংলাদেশ হোল্ডিং লিমিটেড কোম্পানি” নামে একটি কোম্পানি পাটকাঠি পুড়িয়ে ছাঁই উৎপাদণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন- এ লক্ষ্যে চুল্লী নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের পথে। কোম্পানির পরিচালক জিং লিউ এবং লিউ রুই এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, গ্রাম অঞ্চলের কৃষকের নিকট থেকে ন্যায্যমূল্যে পাটকাঠি ক্রয় করা হবে। এখান থেকে পাটকাঠি পুড়িয়ে প্যাকেটজাত ছাঁই চায়নাতে রপ্তানি করা হবে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পাট চাষীরা জানান, এবার পাটের যে দাম পাওয়া যাচ্ছে তাতে পাট আবাদ করে কৃষকদের লোকসান হচ্ছে। পাটের লোকসান কিছুটা পুষিয়ে নিতে বেশি করে পাটকাঠির যতœ নিচ্ছেন চাষীরা। এই পাটের মৌসুমে এক মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ১৫শ’ থেকে ১৬শ’ টাকা। আর ১শ’ আঁটি পাটকাঠি বিক্রি করছে ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা। মণ প্রতি পাট আবাদে সার, সেচ, নিড়ানি, কাটা ও আশ ছাড়ানো বাবদ ব্যায় হয়েছে ১৯শ’ থেকে ২ হাজার টাকার মতো বলে জানিয়েছেন।

(এএনএইচ/এএস/সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৬)