রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলা জুড়ে ধান ক্ষেতে(জমিতে) আম বাগান করার হিড়িক চলছে। রৌদ বৃষ্টিতে পুড়ে ধান আবাদ করে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় কৃষকদের এ-সিদ্বান্ত বলে জানান উপজেলার অনেক কৃষক।

উপজেলার বলিদ্বারা,সন্ধারই,ধর্মগড়,নেকমরদ,বাচোর,রাউতনগরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়,যেসব জমিগুলোতে যুগ যুগ ধরে ধানের বাম্পার আবাদ হয়েছে সেসব জমিগুলোতে এখন ধান গাছের পাশাপাশি সারিবদ্ব ভাবে বিভিন্ন উন্নত প্রজাতের আম গাছ লাগিয়ে বাগান করে তুলছে উপজেলার অধিকাংশ কৃষকরা।

এ কারণে উপজেলায় দিনের দিন ধানের জমি সহ কাঠ ফসলের জমি কমে যাচ্ছে। কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, এ জেলায় যে ধানের আবাদ হয় এতে ঠাকুরগাঁও জেলায় কভারেজ হয়ে বাইরের জেলাগুলোতে পাঠানো যায়,তবে এভাবে চলতে থাকলে সে আশা করা যাবে না। ধর্মগড়ের কৃষক আবুল তার ১ একর ধানী জমিজুড়ে এবার আম্রপালী আম গাছ লাগিয়েছেন,তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, কৃষি কাজ করে লাভের মধ্যে শুধু বাড়ির ভাতের চাল আর খড়টাই হয় ধানের ন্যায্য দাম পাওয়া যায় না। আবার সরকার ন্যায্য মূল্য ধান কেনার ঘোষনা দিলেও আমরা সেখানে সিরিয়ালে পাই না সব চলে যায়,কতিপয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিকব্যক্তি,সহবিভিন্ন প্রভাবশালীদের পকেটে,তাই তিনি বলেছেন এবার এবং আরেকবার ধান চাষ করে আর করবো না লাভজনক ব্যবসা আমের বাগান করবো। রাউতনগর,নেকমরদ গ্রামের রহিম,কাসেম ও একই কথা বলেন,তারা বলেন,ধান আবাদ করতে অনেক কষ্ট হয় কিন্তু অবশেষে আমরা আমাদের খরচটা উঠাতেই হিমশিম খেয়ে যায়,তাই আমরা এবার প্রায় ৩ একর করে ৬ একর জমিতে আম বাগান করেছি। অল্প একটু জমিতে আগামীবার শুধু বাড়ির চালের জন্য একটু ধান আবাদ করবো।

উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ রয়েছে শংকায় বিশেষ করে যারা আবাদ করে না। কারণ এ উপজেলায় আবাদের জমি কমে গেলে এগুলো বাহিরের জেলাগুলো থেকে আমদানি করতে হবে এতে প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম আরো বৃদ্ধি হয়ে যাবে। সাবেক এক কৃষি কর্মকর্তা বলেন, সরকার এখনই যদি কৃষকদের এ উদ্যোগ থেকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে, ধানের জমি কমে গেলে এ উপজেলায় কি ক্ষতি হবে তা বিভিন্নভাবে প্রচার করে বুঝিয়ে ধানের আবাদে যদি কৃষকদের না ফিরিয়ে আনতে পারে তাহলে খাদ্য দ্রব্যের বিশেষ সংকটে পড়বে রানীশংকৈর উপজেলা। আরো জানা যায়, ঠাকুরগাও জেলা জুড়ে ধানী জমিগুলোতে আমবাগান করার হিড়িক চলছে। এ বিষয়ে ঠাকুরগাও জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আরশেদ আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোণ ধরেন নি।

(কেএএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৬)