সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় এবার নিশ্চিত পাচারের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে মাদরাসা ছাত্রী মরিয়ম সুলতানা (১৬)। প্রতারক প্রেমিক ভালোবেসে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে নিয়ে যায়। সে দেশের সীমান্তরক্ষীরা ধাওয়া করলে গ্রেপ্তার এড়াতে নদী সাঁতরে ফের বাংলাদেশ ভূখন্ডে প্রবেশের পর গ্রামবাসিরা আটক করার পর নিশ্চিত পচারের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়।

গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ভোমরা সীমান্তের হাড়দ্দাহ নামকস্থানে এ ঘটনা ঘটে।

সদর উপজেলার নইকাটি গ্রামের সালাম মোড়লের মেয়ে মরিয়ম সুলতানা জানান, সে স্থানীয় নইখাটি দাখিল মাদ্রসার নবম শ্রেনীর ছাত্রী। তার পিতা ভ্যান চালিয়ে সংসারের ব্যায়ভার নির্বাহ করে। পার্শ্ববর্তী জোদ্দিয়া গ্রামের রেজাউল সরদারের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৭) তাকে ভালোবাসে। গত কয়েকদিন ধরে তাকে ভারতে নিয়ে বিয়ে করে সংসার করবে বলে তার সাথে বাড়ির কাউকে কিছু না জানিয়ে চলে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছিলো।

শরিফুলকে সেও ভালোবাসে মনে প্রাণে। তাই তার কথায় রাজি হয়ে গত শুক্রবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে তার হাত ধরে বাড়ি ছেড়ে চলে আসে ভোমরা ইউনিয়নের হাড়দ্দাহ সীমান্তে। সেখানে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে ছিলো মানবপাচারকারি বৈচনা গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন।

সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলযোগে জাহাঙ্গীর তাদেরকে সীমান্তে এনে ৯ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে হাড়দ্দাহ গ্রামের গরু ব্যবসায়ী খোকা আলীর ছেলে ইউনুছ আলীসহ কয়েকজন গরু ব্যবসায়ীর সাথে সীমান্ত পার করে ভারতের ভূখন্ডে পার করে দিয়ে সটকে পড়ে। ভারতীয় ভূখন্ডে থাকা কালিন সীমান্ত রক্ষী বিএসএফ তাদেরকে তাড়া করলে তারা মরিয়মকে নিয়ে পাচারকারি শরিফুল নদী সাঁতরে এদেশে চলে আসে।

পরে গ্রামবাসিরা সন্দেহজন অবস্থায় তাদের আটক করে মানবপাচার প্রতিরোধে কাজ করা সংগঠন পদ্মলোক কেন্দ্রে জানায়।

পদ্মলোক কেন্দ্রর সভাপতি মো: শফিকুল ইসলাম জানান, রাত ১২ টার দিকে খবর পেয়ে তিনি পাচারের শিকার মাদ্রাসা ছাত্রী মরিয়মকে উদ্ধার করেন। তিনি ঘটনা স্থলে যাওয়ার আগেই পাচারকারি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার কথা বলে কৌশলে পালিয়ে যায়। বিষয়টি পাচার। আবেগতাড়িত হয়ে মেয়েটি পাচারকারির খপ্পরে পড়েছিলো। সে প্রাণে বেঁচেছে।

পরে পদ্মলোককেন্দ্র সমন্বয়কারি মো: আব্দুর রহমান জানান, ঘটনা জানিয়ে স্থানীয় পদ্মশাঁখরা বিজিবি ক্যাম্পে ও সাতক্ষীরা সদর থানায় খবর দেয়া হয়। শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বিজিবি উপস্থিতিতে সদর থানার এস আই নজরুল ইসলামের নিকট মরিয়মকে হস্তান্তর করা হয়।

এবিষয়ে এসআই নজরুল ইসলাম জানান, এটি নিশ্চিত পাচার। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পাচারকারি গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে। ভিকটিমকে তার অবিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

(আরকে/এএস/সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৬)