স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা : কুমিল্লা জেলা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সভাপতি এ কে এম রকিব উদ্দিন মুকুল হত্যার প্রধান আসামি যুবদল নেতা মো: আরিফসহ ৩জনকে বিপুল অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে ২টি পিস্তল, ২টি শুটার গান ও ২টি এলজি বন্দুক ও ১৩ রাউন্ড গুলি। বুধবার ভোরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) আলী আশরাফ ভূঁইয়া।

তিনি জানান, গত ১৩ মে ভোর ৫ টায় এ কে এম রকিব উদ্দিন মুকুলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিনই তার স্ত্রী নাজমুন নাহার বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার সূত্র ধরে বুধবার ভোর ৩টা ৫০ মিনিটে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সুপার মো: শাহ আবিদ হোসেনের নেৃতত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম মনজুর আলমসহ সঙ্গীয় ফোর্স কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ময়নামতি সুপার মার্কেটের সামনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে মুকুল হত্যার প্রধান আসামী আরিফকে মোটরসাইকেলসহ আটক করে। এসময় ডিবি পুলিশ আটককৃত আসামী আরিফের সাথে থাকা একটি ব্যাগ থেকে ১টি পিস্তল, ২টি শুটার গান ও ২টি এলজি বন্দুক এবং ১৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে।

পুলিশ আসামী আরিফকে তাৎক্ষণিকভাবে মুকুল হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বীকার করে যে, গত ১৩ মে বিকেল ৫টায় পিস্তল দিয়ে মুকুলের মাথায় গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। যে পিস্তল দিয়ে গুলি করেছিল তা তার বন্ধু ফরহাদের কাছে আছে। পুলিশ তার দেয়া তথ্য মতে চাঙ্গিনীতে ফরহাদের ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে ফরহাদকে আটক করে। আরিফ ও ফরহাদকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে ফরহাদ এক পর্যায়ে পিস্তলের বিষয় স্বীকার করে এবং পিস্তলটি তার বন্ধু বলরামপুরের মোহন মিয়ার কাছে জমা রেখেছে বলে জানায়।

পুলিশ সুপার মো: শাহ আবিদ হোসেনের নেতৃত্বে আটককৃত আরিফ ও ফরহাদকে নিয়ে বলরামপুর মোহন মিয়ার বাসায় পুলিশ অভিযান চালায় ও মোহন মিয়াকে আটক করে। আটককৃত ৩জনকে মুখোমুৃখি জ্ঞিাসাবাদের এক পর্যায়ে ফরহাদের স্বীকার করা মতে মোহন মিয়া তার বসত ঘরের ড্রেসিং টেবিলের নিচের ড্রয়ার থেকে মুকুল হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত পিস্তল ও ৫ রাউন্ড গুলি বের করে দেয়। আরিফ তা সনাক্ত করে ও সাক্ষীদের মোকাবেলায় স্বীকার করে এ পিস্তল দিয়েই সে নোয়াপাড়ার মুকুলের মাথায় গুলি করেছিল।

আটককৃত আসামীরা হলো- কোতয়ালী থানাধীন নোয়াপাড়ার আ: গফুর মেম্বারের পুত্র মো: আরিফ(৩৫), ফেনী জেলার ফুলগাজী থানাধীন মনতলা মজুমদার বাড়ির আ: মান্নানের ছেলে মো: আবদুর গফুর(৩৫) ওরফে ফরহাদ বর্তমানে কুমিল্লা চাঙ্গিনী এলাকায় কাউন্সিলর মো: আবুল বাসারের সচিবের ভাড়াটিয়া ও কুমিল্লার কোতয়ালী থানাধীন বলরামপুরের মো: আলাউদ্দিনের ছেলে মো: মোহন মিয়া (৩৫)।

পুলিশ জানায়, তাৎক্ষণিক থানায় রেকর্ডপত্র যাচাই-বাছাই করে জানা যায় আসামী মো: আরিফের বিরুদ্ধে ৩টি মামলাসহ ১১টি মামলা রয়েছে।

উল্লেখ্য, একেএম রকিব উদ্দিন মুকুলকে গত ১ মে ফজরের নামাজ পড়ে আসার পথে নোয়াপাড়ায় তার বাড়ির সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি একজন ডেকোরেটর ব্যবসায়ী ছিলেন।

(এনসিএম/এএস/সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৬)