নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বিলাশবাড়ি ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে অন্তত শতাধিক বাড়িতে মিটার ছাড়াই বে-আইনীভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। আর এসব বিদ্যুৎ সংযোগ সংশ্লিষ্ট পিডিবি কর্মকর্তারা দালালদের মাধ্যমে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার চাঁদাবাজি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ লাগাতে গিয়ে মিলন হোসেন নামে ওই গ্রামের এক যুবক সম্প্রতি বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। এর পরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এলাকায় চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

জানা গেছে, সান্তাহার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অধীনে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের আড়াইশ গ্রাহকের নতুন সংযোগ দেয়ার নামে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা দালালদের মাধ্যমে অন্তত ২০ লক্ষাধিক টাকা আদায় করে। কিন্তু সময়মত সংযোগ দিতে ব্যর্থ হলে গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। অগত্যা গত ঈদ উল আযহার দুইদিন আগে মিটার ছাড়াই গ্রাহকদের অবৈধভাবে বিদ্যুৎ চালাতে অনুমতি দেয় পিডিবির ওই অসাধু কর্মকর্তারা। ফলে গ্রামটিতে মিটার ছাড়াই বিদ্যুতের লাইন চালু করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে দালালরা কর্মকর্তাদের ঘুষ এবং মিটার দেয়ার নাম করে গ্রাহকদের কাছ থেকে ওই টাকা আদায় করেছে।

গ্রামবাসী জানায়, গ্রামে পিডিপির লাইন আনার নাম করে দালালরা আগেই লোকজনের কাছে বিভিন্ন অংকের টাকা নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে বিদ্যুতের লাইন আসার পর দালালরা বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়ার নাম করে প্রতি গ্রাহকের কাছ থেকে ৯ হাজার টাকা করে আদায় করে। ঈদ উল আযহার দুই দিন আগে গ্রামটিতে পিডিবির লাইন চালু করা হয়। প্রথমে ৬০ জন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। অধিকাংশই গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে বাকি গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এসব বাড়িতে ঈদের পর থেকেই মিটার ছাড়া বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। ভূক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, দালালরা বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলীর সান্তাহার কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের ঘুষ ও মিটার বাবদ তাঁদের কাছ থেকে এই অর্থ নিয়েছে বলে জানান।

বিলাশবাড়ি ইউপির চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান কেটু সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে বিদ্যুৎ একটি দুর্লভ পন্যে পরিনত হযেছে। আর সেকারনে কিছু লোক অফিসকে ম্যানেজ করে এমন কাজ করছে ।

এব্যাপারে বৃহস্পতিবার বিকেলে সান্তাহার পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী জিল্লুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ আদায় বা চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, শ্রীরামপুর গ্রামে ঈদের দুই দিন আগে পিডিবির ট্রান্সফরমার লাগানো হয়। ঈদের ছুটির ব্যস্ততার কারনে লাইনটি ট্রিপ করা হয়নি। আর সে সুযোগে স্থানীয় কিছু ছেলে লাইনটি চালু করে। পরবর্তীতে আমরা জানতে পেরে ট্রান্সফরমার ট্রিপ করে রাখা হয়। তবে নিয়ম অনুসারে মিটার লাগানোর প্রেক্ষিতে সংযোগ দেয়া হচ্ছে।

(বিএম/এএস/সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৬)