বান্দরবান প্রতিনিধি : পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি বলেছেন, পাহাড়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জুমের ফলন বাড়াতে উন্নত বীজ উৎপাদনের জন্য কৃষি বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আহবান করেছেন। তিনি বলেন, পাহাড়ী জুমের ধান ঘ্রাণে ও স্বাদে অতুলনীয়। মিনিকেট ও চিনিগুড়ার মতো জুমের এই চাল প্যাকেটজাত করেও ভাল দামে বিক্রি করা যাবে।

তাই প্রকৃত জুমের ধান সংগ্রহ করে গবেষণার মাধ্যমে উন্নত জাত জুুমিয়াদের মধ্যে বিতরণের আহবান জানান। বৃহস্পতিবার ক্যায়ামলং এলাকায় মারমা সম্প্রদায়ের ককস্ই পোয়ে জুমের নবান্ন উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, নানা কারণে পাহাড়ে জুমের চাষ কমে যাচ্ছে এবং প্রকৃতিগত ভৌগলিক কারণে জুম চাষাবাদে ফলনও কমে আসছে। দেশে জনসংখ্যা বাড়লেও জমির পরিমান বাড়েনি। পাহাড়ীদের জুম চাষ জুমিয়া প্রতিটি পরিবারের বছরের খাবার। কোন কারণে ফলন ভাল না হলে দুর্গম আঞ্চলে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। তাই জীবিকার জন্য পাহাড়ীদের জুম চাষের বিকল্প নেই। তিনি আরো বলেন, জুম চাষের পাশাপাশি অর্থকরী মিশ্র ফল চাষ করতে হবে। পরিবারের সদস্যদের মানুষ করতে হলে পাহাড় খালি রাখা যাবে না। প্রতিটি পাহাড় বাগানের মাধ্যমে ভরে দিতে হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্গম পাহাড়ে যেখানে পরিবহন সমস্যা আছে সেখানে আগামীতে মসলা চাষের প্রকল্প দেয়া হবে। যাতে কৃষকরা সহজে পরিবহন করে মসলা ভাল দামে বাজারজাত করতে পারেন। এ বিষয়ে কৃষি বিভাগকে আরো উদ্যোগী হয়ে কাজ করার আহবান জানান।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্য সা প্রু মারমা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মারমা সম্প্রদায়ের ককস্ই পোয়ে জুমের নবান্ন উৎসবে জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজন চৌধুরী, জেলা পরিষদের সদস্য সিং ইয়ং, থোয়াই হ্লা মং মারমা খেয়াংসহ সরকারি-বেসরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সাংস্কৃতিক ইনিষ্টিটিউট এর পরিচালক মং নু চিং মারমা।

মারমা সম্প্রদায়ের রীতি অনুযায়ী জুম পাহাড়ে পাড়ার পুরোহিত পূজা অর্চনার মাধ্যমে জুম ধান কাটার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করেন। এ সময় জুমে উৎপাদিত অন্যান্য ফসলও উৎসর্গ করা হয়।

(এএফবি/পি/অক্টোবর ০৬, ২০১৬)